ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে খুন, পরকীয়া প্রেমিকা কারাগারে

বরিশালে ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী মাসুদ খুনের মামলায় প্রধান অভিযুক্ত প্রবাসীর স্ত্রী পরকীয়া প্রেমিকা হালিমা বেগম শান্তাসহ (৩১) তাঁর বাবা শওকত হোসেন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ২টার দিকে সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়নের মোল্লার দোকান এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ রোববার (১৩ এপ্রিল) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান। তিনি জানান, ব্যবসায়ী মাসুদ খুনের ঘটনায় তাঁর ভাইয়ের করা মামলায় তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলায় টাকা ছিনিয়ে নিতে পরকীয়া প্রেমিকা শান্তা মাসুদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহত মাসুদের ভাই মো. করণ।
অপর দিকে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে পাশে থাকা ছুরি অসাবধানবশত মাসুদের পেটে ঢুকে যায় বলে দাবি করেছেন প্রধান অভিযুক্ত পরকীয়া প্রেমিকা শান্তা।
প্রাথমিক তদন্তের সূত্র ধরে তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) রাজীব রেজা জানান, অভিযুক্ত হাফিজা বেগম ওরফে শান্তার সঙ্গে ভিকটিম মাসুদুর রহমানের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং কয়েক মাস ধরে শান্তা তাঁর (নিহত ব্যবসায়ীর) টাকা-পয়সা হাতিয়ে আসছিলেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত শান্তা ঘটনার দিন ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানকে প্ররোচিত করে তাঁর ভাড়া বাসায় নিয়ে যান এবং বিয়ের জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হলে তিনি তাঁর সহযোগীদের সহায়তায় মাসুদুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশে মারধর করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।
মামলার তথ্য ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, তিন মাস আগে নগরীর নতুন বাজার এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে মাসুদের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান নথুল্লাবাদ এলাকার শওকত হোসেনের মেয়ে শান্তা। দুই সন্তানের জনক প্রেমিক মাসুদের স্ত্রী কয়েক মাস আগে মারা গেছেন। এদিকে প্রবাসীর স্ত্রী শান্তার দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে। পরকীয়ার সূত্র ধরে মাসুদ শান্তার বাসায় প্রায়ই যাওয়া-আসা করতেন। গত শুক্রবার রাতেও শান্তার কলেজ এভিনিউয়ের ভাড়া বাসায় যান মাসুদ।
মাসুদের ভাই করণের দাবি, মাসুদের সঙ্গে থাকা ব্যবসার দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে মাসুদের পেটে ছুরিকাঘাত করেন শান্তা। ঘটনার সময় আরও বেশ কয়েকজন ছিল। এরপর বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ( শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রাতেই মারা যান মাসুদ। এরপর ওই রাতেই তাঁর ভাই মো. করণ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় শান্তাসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ওসি মিজানুর রহমান বলেন, প্রধান অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।