ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের টাকা নিয়ে উধাও সমাজসেবা কর্মকর্তা

ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পসহ দুস্থদের ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে উধাও নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক। গত ২৮ জুলাই থেকে তিনি অফিসে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক শাহ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সমাজসেবা কার্যালয়ের ব্যাংক হিসাবে থাকা দুঃস্থদের ঋণ কার্যক্রম ও বিভিন্ন ভাতার ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করে হাতিয়ে নেন এই মোজাম্মেল হক। অফিস স্টাফ ও উপজেলার অন্য কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও কয়েক লাখ টাকা নানা অজুহাতে ধার নিয়েছেন তিনি।
ঘটনা জানাজানি হলে এ বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নেন জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা। দুর্গাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মাসুল তালুকদারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। গত ১৪ আগস্ট তিনি এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জেলা সমাজেসেবা কার্যালয়ে জমা দেন।
মোহনগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, সমাজসেবা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তির চার লাখ ৭৫ হাজার, মাতৃকেন্দ্রের ঋণ কর্মসূচির পাঁচ লাখ ১৩ হাজার, ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের এক লাখ ৪০ হাজার ও ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের ২২ লাখ ৪৭ হাজার টাকাসহ মোট ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা একজন কর্মচারীর স্বাক্ষর জাল করে উত্তোলন করে নিয়ে যান।
অফিস সহকারী নিজামুল আজাদ বলেন, ‘মোজাম্মেল স্যার গত ২৭ জুলাই অফিস করেছেন। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত আর অফিসে আসেননি। তার মোবাইলফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।’
২০২৪ সালের মে মাসে মোহনগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসবে যোগদান করেন মোজাম্মেল হক। এরপর থেকেই নানা অনিয়ম শুরু করেন।
এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক শাহ আলম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে। মোজাম্মেল হক ৩৩ লাখ টাকার বেশি অবৈধভাবে অফিসের ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলন করেছেন বলে তদন্তে পাওয়া গেছে। ওই তদন্ত প্রতিবেদন অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, সরকারি টাকা মেরে হজম করার কোনো উপায় নেই। তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। চাকরি যাবে, গ্রেপ্তার হবে এবং টাকাও ফেরত দিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হকের ব্যবহৃত মোবাইফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুর্গাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা পদে দায়িত্ব পালনকালে একইভাবে অর্থ কেলেঙ্কারি করেন এই মোজাম্মেল হক। তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করায় তিরস্কার দণ্ড দিয়ে তাকে মোহনগঞ্জ উপজেলায় বদলি করা হয়।