করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার অভিজ্ঞতা জানালেন ‘জেমস বন্ড’খ্যাত ওলগা

করোনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছে গোটা বিশ্বের দৃশ্যপট। স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন, থমকে গেছে সব কর্মকাণ্ড। আর সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে বেশ ভালোভাবেই। তবে এতকিছুর পরও প্রায়ই আসছে ইতিবাচক খবর।
সম্প্রতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ওলগা কুরিলেঙ্কো। ইউক্রেনে জন্ম নেওয়া ‘জেমস বন্ড’ সিরিজের ‘কোয়ান্টাম অব সোলাস’ তারকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে সেই তথ্য জানান নিজেই। এরপর পেরিয়েছে বেশ কিছু দিন। পরে ভক্ত-অনুরাগীদের সুস্থ হওয়ার খবর দেন ওলগা। ইনস্টাগ্রামে একটি ফায়ারপ্লেসের সামনে সন্তানকে কোলে নিয়ে তোলা একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। গত সোমবার পোস্ট করা ওই ছবিতে ওলগার মুখে মাস্ক পরা ছিল। ওই পোস্টেই তিনি করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়ার খবর জানান।
ইনস্টাগ্রামে ওলগা লেখেন, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। গত এক সপ্তাহ ধরে আমি উচ্চমাত্রার জ্বর ও মাথাব্যথা নিয়ে বেশিরভাগ সময়ই বিছানায় ছিলাম। দ্বিতীয় সপ্তাহে জ্বর চলে গিয়েছিল, কিন্তু সামান্য কাশি ছিল এবং আমি খুব ক্লান্ত অনুভব করছিলাম। তবে দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষে এখন আমি সম্পূর্ণ সুস্থ অনুভব করছি। কাশি প্রায় চলেই গেছে। যদিও সকালে একটু কাশি হয়, আর সারা দিন একদমই হয় না!’
ওলগা আরো লেখেন, নিজের ছেলের সঙ্গে একান্ত সময় কাটাচ্ছেন। ‘আমি ভালো আছি! এখন আমি সময়টা উপভোগ করছি এবং আমার ছেলের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি,’ বলেন ওলগা।
কয়েকদিন আগে ইনস্টাগ্রামে নিজের শারীরিক খবরাখবর ভক্তদের জানান ওলগা। সেখানে তিনি কী কী ওষুধ সেবন করেছিলেন, তার বিস্তারিত বিবরণ দেন। এ সময় প্রত্যেকের জন্য শুভ কামনাও জানান এ অভিনেত্রী।
ছয় দিন আগে বেশ কয়েকটি ওষুধের ছবি ও নিজের মাস্কপরা ছবি শেয়ার দেন ওলগা। সেখানে দীর্ঘ বক্তব্যও লেখেন। জ্বর চলে যাওয়াসহ লন্ডনে অবস্থান করার খবরও দেন এ অভিনেত্রী।
ওই পোস্টে ওলগা লেখেন
‘আমি আজ বেশ ভালো অনুভব করছি। আমার জ্বর সেরে গেছে। শুনেছি, মানুষ জানে না যে আমি বর্তমানে কোথায় আছি। আমি লন্ডনে আছি। কীভাবে বুঝলাম আমি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত? আমি করোনাভাইরাসের টেস্ট করিয়েছিলাম এবং টেস্টটি পজিটিভ এসেছে। শুশ্রূষার জন্য চিকিৎসকরা কী কী ওষুধ দিয়েছিলেন? কিছুই না!
জ্বর খুব বেশি হলে, অথবা শরীরে অনেক ব্যথা অনুভব করলে আমাকে প্যারাসিটামল খেতে বলা হয়েছে। যা-ই হোক, আমি বিভিন্ন ভিটামিন ও সাপ্লিমেন্ট নিয়েছি। অবশ্যই মাথায় রাখবেন, ওই ভিটামিনগুলো করোনাভাইরাস প্রতিকারের জন্য নয়। সেগুলো কেবল আপনার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে। ভিটামিনগুলোর মধ্যে রয়েছে—
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড : ভিটামিন বি-৫, এটাকে প্যানটোথেনিক অ্যাসিড বা প্যানটোথেনেটও বলা হয়। স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সব ধরনের বি-কমপ্লেক্স ভিটামিনের মতো বি-৫ খাবারকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে।
ভিটামিন-ই : অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যসহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। ভিটামিন-ই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, কোষের ভিটামিন-ই : ভিটামিন-ই চর্বি দূর করে, রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যসহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। ভিটামিন-ই রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, কোষের কার্যকারিতা ও ত্বককে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এটি একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা খাদ্যের হজমপ্রক্রিয়া ও পরিবেশের ক্ষতিকর উপাদানগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে লড়তে সহায়তা করে।
ভিটামিন সি : এর উপকারিতা নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই!
হলুদ : অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।
জিঙ্ক : রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করে।
আমি কলোয়ডাল সিলভারও (অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও ক্ষতস্থান ব্যবহারের জন্য) নিয়েছি। তবে, দয়া করে সাবধান থাকবেন। কারণ, কিছু ওয়েবসাইটে এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে, এটি সবার জন্য নয়। দয়া করে এটি ব্যবহারের আগে নিশ্চিত হয়ে নিন, নইলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
আমি সেল ফুডও (বিভিন্ন খনিজ উপাদান, এনজাইম ও অ্যামিনো অ্যাসিডের দ্রবণ) নিয়েছি। কিন্তু আবারও বলছি, এ ব্যাপারে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খোঁজখবর নিন। কারণ, কেউ কেউ আবার এটি ব্যবহার করতে নিষেধও করেছেন! সবাইকে শুভ কামনা।’
গত ১৬ মার্চ ‘জেমস বন্ড’ সিরিজের ‘কোয়ান্টাম অব সোলাস’ তারকা ওলগা কুরিলেঙ্কো কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হন। তবে দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকার পর নিজেকে ‘সম্পূর্ণ সুস্থ’ দাবি করেছেন ওলগা কুরিলেঙ্কো।