দখিন হাওয়া তালাবন্ধ, হোম কোয়ারেন্টিনে শাওন

নির্মাতা-অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন। কিছুদিন আগেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া একটি বইমেলায় অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সে দেশেও করোনাভাইরাসের প্রকোপ থাকায় গতকাল দেশে ফিরেছেন। ফিরেই হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী।
আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিজের ফেসবুক ওয়ালে এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানিয়েছেন মেহের আফরোজ শাওন। বানান পরিবর্তন করে পাঠকদের জন্য বেশ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো।
শাওন লেখেন, বেশ আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া একটি বইমেলায় অংশ নিতে আমেরিকায় গিয়েছিলাম। ওয়াশিংটনে প্রকোপ থাকলেও নিউইয়র্কে করোনা প্রকাশ পায়নি তখনো। ভাইরাসটির সংক্রমণ বাড়ার পর পরই আমেরিকার বিভিন্ন স্টেটে সতর্কবার্তা জারি হয়ে যায়। তারপর ঘর থেকে বের হইনি একদম। এ বছর মে মাসের ৩০, ৩১ তারিখে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্মেলন ২০২০-এর সংবাদ সম্মেলন বাতিল এবং মূল অনুষ্ঠানের তারিখ স্থগিত করা হয় তৎক্ষণাৎ। প্রতি মুহূর্তের খবর দেখছিলাম আর ভাবছিলাম বাচ্চা দুটোর কাছে ফিরতে পারব তো?
গতকাল ১৬ মার্চ দেশে ফিরেছেন শাওন। তিনি আরো লেখেন, পরম করুণাময়ের অশেষ কৃপায় গতকাল দেশে ফিরেছি। ঢাকা এয়ারপোর্টে স্বাস্থ্যবিষয়ক সতর্ক অবস্থান দেখে ভালো লাগলেও দুবাই থেকে ফেরার ফ্লাইটে মধ্যপ্রাচ্যের যাত্রীদের গণহারে প্যারাসিটামল কিংবা প্যানাডল খেয়ে ‘জ্বর যেন না ওঠে তাইলে মেশিনে আটকায়ে দেবে’ ধরনের আচরণ খুব আশঙ্কাজনক লেগেছে! ‘কোয়ারেন্টাইন’ শব্দটার প্রতি এক অজানা ভীতিতে সবাই। ‘মাত্র ১৪টা দিন নিয়ম মেনে আলাদা থাকলে পরিবারের অন্য সদস্যরা করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিমুক্ত থাকবে’—এই কথা চার-পাঁচজনকে বোঝাবার চেষ্টা করে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছি আমি। তবে নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলাম নিউইয়র্ক থেকে রওনা হওয়ার একদিন আগেই। আব্বু-আম্মুর সঙ্গে কথা বলে রেখেছিলাম, তাঁরা দুজন সায় দিয়েছেন। নিনিত ও নিষাদ দুজনকেই বুঝিয়ে বলেছেন। পুত্রদ্বয়ও বিষয়টা সুন্দরভাবেই গ্রহণ করেছে।
হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন জানিয়ে শাওন লেখেন, “আমি গতকাল থেকে আমার ধানমণ্ডির বাসায় সবার থেকে আলাদা (হোম কোয়ারেন্টিন শব্দটিতে আমারও ভয় লাগে!) আছি। আমার মার বাড়িতে থাকা পুত্রদের সাথে ঘণ্টায় ঘণ্টায় ভিডিও কলে কথা হচ্ছে। বাসায় ফেরার পর গতকাল রাতে প্রতিবেশী স্বর্ণা ভাবি জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানাতে চাইলে তাকে বারণ করেছি। তিনি বুঝতে পেরেছেন এবং তিন-চার হাত দূরে দাঁড়িয়ে খাবার দিয়ে গেছেন। ‘দখিন হাওয়া’য় আমার বাসার দরজা প্রথমবারের জন্য তালাবন্ধ রাখা হয়েছে!”
আগামী ‘সাড়ে ১৩ দিন’ কী কী করবেন, তার তালিকাও প্রকাশ করেছেন শাওন। লিখেছেন, এ সময় তিনি বিশ্রাম নেবেন, বিশ্বের করোনা পরিস্থিতির খবর দেখবেন, বাংলাদেশের খবর দেখবেন। নেটফ্লিক্স ও ফেসবুকও স্ক্রল করে সময় কাটাবেন। সবাইকে সচেতন হওয়ারও আহ্বান জানান শাওন।