‘আমার অভিনয় পছন্দ করতেন রাজ্জাক আঙ্কেল’

নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে জয়া আহসান ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। অবশ্য ছবিতে অভিনয়ের আগে থেকেই রাজ্জাকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল। আজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দুপুরে রাজ্জাককে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। সেই সময় এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন জয়া।
এনটিভি অনলাইন : শুনেছি একবার ঢাকা থেকে একই ফ্লাইটে ইংল্যান্ডে রাজ্জাকের সঙ্গে আপনি গিয়েছিলেন। কেমন ছিল সেই জার্নি?
জয়া আহসান : লন্ডনে একসঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমরা গিয়েছিলাম। অনেক লম্বা সময়ের জার্নি ছিল। তখন তিনি একটা বই পড়ছিলেন। বইয়ের নামটি ছিল ‘হিরে বসানো সোনার ফুল’। সমরেশ মজুমদারের লেখা একটি উপন্যাস। বইটি পড়া শেষ করে তিনি আমাকে উপহার দিয়েছিলেন। দেওয়ার সময় তিনি দুই লাইনের কথাও লেখে দিয়েছিলেন। বইয়ে স্বাক্ষরও দিয়েছিলেন রাজ্জাক আঙ্কেল।
এনটিভি অনলাইন : কী লিখে দিয়েছিলেন মনে আছে?
জয়া আহসান : স্পষ্ট মনে নেই। তিনি সম্ভবত লিখেছিলেন ‘খুব ভালোবাসি’। এটাই ছিল রাজ্জাক আঙ্কেলের কাছ থেকে পাওয়া আমার একমাত্র উপহার।
এনটিভি অনলাইন : ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী’ ছবির শুটিংয়ে সময়ের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই...
জয়া আহসান : খুব মনে আছে। উনার সঙ্গে আসলে আমার নানান রকম স্মৃতি আছে। ইউনিটে উনি যখন দাঁড়াতেন তখন উনার সঙ্গে অন্য সবার পার্থক্য ভালোভাবে চোখে পড়ত। উনার বাচনভঙ্গী থেকে শুরু করে সবকিছুতে শিক্ষার ছাপ ছিল। শুটিংয়ের ফাঁকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের অনেক গল্প আমার সঙ্গে করেছিলেন তিনি। অনেক আড্ডা দিয়েছি আমরা। আর একটা কথা বলি, শুটিং করার চেয়ে তাঁর কথা শুনতে আমার ভীষণ ভালো লাগত। আমি অপেক্ষা করতাম কখন তাঁর কথাগুলো শুনতে পারব।
এনটিভি অনলাইন : কী ধরনের গল্প করতেন?
জয়া আহসান : বিভিন্ন লেকে তিনি বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে অনেক পছন্দ করতেন। এসব আমাকে বলেছেন। তাঁর মাছ ধরার নেশা ছিল। আমাদের নিজের বড়শি দিয়ে তোলা মাছও খাওয়াতে চেয়েছিলেন। এ ছাড়া কলকাতা থেকে কীভাবে তিনি ঢাকায় এসেছেন, সেসব গল্পও করতেন।
এনটিভি অনলাইন : আপনার অভিনয় নিয়ে রাজ্জাকের মূল্যায়ন কেমন ছিল?
জয়া আহসান : আমার অভিনয় পছন্দ করতেন বলে জানিয়েছিলেন রাজ্জাক আঙ্কেল। একদিন ফোন করে ‘রংবাজ’ ছবির রিমেকে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন আমাকে। ছবিটি আর করা হলো না। তিনি চলে যাওয়াতে আমাদের বড় একটা জায়গা ফাঁকা হয়ে গেল। আধুনিক অভিনয়ের শিক্ষা তাঁর কাছ থেকেই আমরা পেয়েছি। তাঁর শূন্যস্থান কখনো পূরণ হওয়ার নয়। চলচ্চিত্রের শিল্পের জায়গায় ক্ষতি যেমন হলো তেমনি বিরাট একজন অভিভাবকও হারালাম আমরা।