‘হা-শো’ আমাকে নতুনভাবে জন্ম দিয়েছে : রনি
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/10/22/photo-1571763235.jpg)
ছোটবেলা থেকেই কৌতুক উপস্থাপনার মাধ্যমে বন্ধুদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করতেন ‘মীরাক্কেল’খ্যাত আবু হেনা রনি। ২০১০ সালে এনটিভিতে প্রচারিত ‘হা-শো’ অনুষ্ঠানে তিনি প্রথম কৌতুক উপস্থাপনে অংশ নেন। পরে জয় করেন ভারতের টিভি শো ‘মীরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার্স’।
রনির শুরুটাই ‘হা-শো’ মঞ্চে। আর তাই এই স্ট্যান্ড-আপ শোর প্রতি তাঁর রয়েছে আলাদা আবেগ। বললেন, ‘হা-শো’ই তাঁকে দিয়েছে আরেক ‘জন্ম’। আজ তিনি একাধারে কমেডিয়ান, অভিনেতা, উপস্থাপক ও মডেল।
গত চার মৌসুমের সাফল্যের পর ২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে জনপ্রিয় স্ট্যান্ড-আপ কমেডি শো ‘মার্সেল প্রেজেন্টস হা-শো’র পঞ্চম মৌসুম। স্বাভাবিকভাবেই এই শোর হালহকিকত জানতে আগ্রহী দর্শক।
এবার বিচারক হিসেবে থাকছেন চিত্রনায়ক আমিন খান, অভিনেতা তুষার খান ও নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদ। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে প্রযোজনা করছেন জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও কাজী মোহাম্মদ মোস্তফা। উপস্থাপনা করবেন আবু হেনা রনি। যাঁর শুরুটাই হয়েছিল এই মঞ্চে, তিনিই এবার উপস্থাপনার মাধ্যমে মাতাবেন শো।
এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি পর্বের শুটিংও শেষ হয়েছে। এই শোর অংশ হতে পেরে উচ্ছ্বসিত আবু হেনা রনি। বললেন, ‘শুরুতেই বলা জরুরি, হা-শোর প্রথম মৌসুমের পারফরমার ছিলাম। সেটাই আমার টিভি-স্ক্রিনে প্রথম যাত্রা। এক অর্থে এখানেই আমার নতুন করে জন্ম। সেখান থেকে আজ আমি এই মৌসুমের উপস্থাপক। এটা অনেক বড় প্রাপ্তি, সেইসঙ্গে দায়িত্বটাও বেড়ে গেছে। এই শোতেই যেহেতু আমার শুরু, এখানের অভিজ্ঞতা নিয়েই পরবর্তীতে মীরাক্কেল বা অন্য প্রোগ্রামগুলোতে নানা অর্জন হয়েছে। এই শো আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে।’
‘হা-শো’তে উপস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আবু হেনা রনি নিজের সবটুকু ঢেলে দিচ্ছেন পঞ্চম মৌসুমের জন্য। কয়েকটি পর্বের শুটিং হয়েছে। আয়োজক-সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে প্রশংসাও পাচ্ছেন। পাচ্ছেন নানা সুপরামর্শ। বিচারকেরা তাঁকে নানাভাবে সহযোগিতা করছেন। বললেন, এ কদিনেই পুরো টিম তাঁর পরিবারের মতো হয়ে গেছে।
এবারের প্রতিযোগীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন আবু হেনা রনি। বলেন, তিনি যখন স্ট্যান্ড-আপ কমেডি শুরু করেছিলেন, তখন তাঁর সামনে খুব বেশি উদাহরণ ছিল না। অনেক জড়তা ছিল। এখনকার প্রতিযোগীরা দেশ-বিদেশের অনেক পারফরম্যান্স দেখেছেন। সেই প্রস্তুতি নিয়েই তাঁরা পঞ্চম মৌসুমে হাজির হয়েছেন। তাঁরা জানেন, কীভাবে উপস্থাপন করতে হবে। রনি আরো বলেন, তাঁর যে জড়তা ছিল, এখনকার প্রতিযোগীদের মধ্যে সেটা তিনি পাচ্ছেন না।
রনির কাছে এবারের শোর একটি বিশেষ দিক হলো নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ। বললেন, পুরো বিশ্বেই স্ট্যান্ড-আপ কমেডিতে নারীর অংশগ্রহণ কম। তবে ‘হা-শো’তে অনেক নারী পারফরমার এসেছেন। কোনো জড়তা ছাড়াই তাঁরা পরিবেশন করছেন।
হেসে রনি বললেন, ‘জোকসে হয় কি, সাধারণত ছেলেরা মেয়েদের পচায় ছেলেদের এই-ওই সমস্যা, ছেলেদের আচরণে সমস্যা—এসব তুলে ধরছে। এখন মেয়েরা ছেলেদের পচাচ্ছে। এই যে খুনসুটি হচ্ছে, কৌতুকে-কৌতুকে তর্ক হচ্ছে, এটা দারুণ।’
এই কৌতুকাভিনেতার মতে, ধীরে ধীরে স্ট্যান্ড-আপ কমেডি পেশা হয়ে উঠছে। তিনি নিজেই এর উদাহরণ। এই শোতেও কাজ করেছেন অনেকে। আর আমিন খান, তুষার খান ও মুনমুন আহমেদের মতো অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তারকাদের কাছ থেকে প্রতিযোগীরা শুধু কৌতুকই শিখছেন না; শিখছেন বাচনভঙ্গি, উপস্থাপনা, অভিনয়, শারীরিক ভাষাও।
আবু হেনা রনি বলেন, পঞ্চম মৌসুমে পদার্পণ করেছে ‘হা-শো’। এটা অনেক বড় ব্যাপার তাঁর কাছে। এনটিভি কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর অনুরোধ, শো শেষ হওয়ার পরও যেন পারফরমারদের নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন চলে। অনেক স্বপ্ন থাকে পারফরমারদের। তাঁদের স্বপ্নপূরণে যেন আগামী দিনেও সহযাত্রী হয় এনটিভি।
২৪ অক্টোবর থেকে সপ্তাহের বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে এনটিভিতে প্রচার হবে ‘হা-শো’।
বাংলাদেশের ছয়টি বিভাগীয় শহর থেকে প্রাথমিক বাছাই করে মোট ৩৬ জন প্রতিযোগীকে নিয়ে শুরু হয়েছে ‘হা-শো’র মূল অনুষ্ঠান। প্রতি পর্বে সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে নির্বাচিত প্রতিযোগীকে নিয়ে পরবর্তী রাউন্ড অনুষ্ঠিত হবে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত পাঁচজন প্রতিযোগী চূড়ান্ত পর্বে লড়াই করবেন। সেখান থেকে চ্যাম্পিয়ন হবেন একজন।
এনটিভি আয়োজিত ‘হা-শো’ বাংলাদেশের জোকস পারফরম্যান্সভিত্তিক প্রথম রিয়েলিটি শো।