একবারও মনে হয়নি ঘরের বাইরে আছি : পামেলা

পামেলা সিং ভুতোরিয়া, ২০০৬ সালের মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতার সেমি ফাইনালিস্ট ছিলেন। এরপর স্টার স্পোর্টস, জুম টিভি ও সংগীত বাংলা চ্যানেলের অনেক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন তিনি। শুধু উপস্থাপনা নয়, মডেলিং ও চলচ্চিত্রেও রয়েছে তাঁর পথচলা। বলিউডের ‘কাহানি’ ও টলিউডের ‘টান’ ছবিতে সাবলীল অভিনয় করতে দেখা গেছে পামেলাকে। বাংলাদেশে বেশ কয়েকবার এলেও এবারই প্রথম স্থানীয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের উপস্থাপনা করছেন তিনি। বাংলাদেশে থাকার অভিজ্ঞতা, বিপিএলে উপস্থাপনা করার অনুভূতি ও অন্যান্য প্রসঙ্গে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে আলাপ করেছেন পামেলা ভুতোরিয়া।
প্রশ্ন : কেমন লাগছে আপনার বাংলাদেশ?
উত্তর : দারুণ। বাংলাদেশের দর্শকদের প্রচুর ভালোবাসা পাচ্ছি। সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলোতে তাঁরা সেই ভালোবাসার কথা প্রকাশ করছেন। বাংলাদেশের মানুষ অনেক আন্তরিক ও উদার। তাঁরা নিজে থেকে আলাপ করতে অনেক পছন্দ করেন। মানুষকে ভালোবাসতে জানেন তাঁরা। বিপিএলের পুরো টিম ও চ্যানেল নাইনের সঙ্গে কাজ করতে বেশ আরাম লাগছে।
প্রশ্ন : উপস্থাপক আমব্রিনের সঙ্গে আপনার তো ভালো সম্পর্ক রয়েছে?
উত্তর : হ্যাঁ। আমরা সারাক্ষণ তো কাজের ফাঁকে মজা করি। আর রোজ মাঠে আসার আগে ও পরে আমরা দুজন আড্ডা দিই।
প্রশ্ন : ঢাকায় কোথাও বেড়ানোর সময় হয়েছে কি?
উত্তর : আমাদের ডে অফ খুব একটা নেই। আমি আর আমব্রিন একদিনই শুধু ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। বনানী ও গুলশান এলাকায় ঘুরেছি। শপিংও করেছি। দুজন মিলে কফি শপেও গিয়েছি। বেশ মজা হয়েছে। ঘোরার সময় বাংলাদেশি এক ভদ্রমহিলা আমাকে পেছন থেকেই ডেকে বলেছিলেন, “তুমি পামেলা না! তোমার কণ্ঠ শুনেই আমি তোমাকে চিনতে পেরেছি। তোমার ‘টান’ ছবিটা আমি দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে।”
প্রশ্ন : বাংলাদেশি খাবার ভালো লেগেছে?
উত্তর : চিতই পিঠা, খুব ভালো লেগেছে। আমি এই খাবারের ভালোবাসায় পড়ে গিয়েছি। আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে এই পিঠা কীভাবে তৈরি হয়! ভীষণ ভালো লেগেছে চিতই পিঠা। এ দেশের ইলিশ মাছ, কাচ্চি বিরিয়ানি এবং ভর্তাও আমার অনেক প্রিয়। এ ছাড়া রাস্তার মাঝে যে খাবারগুলো পাওয়া যায় ফুচকা ও চটপটি, এই খাবারও মজা লেগেছে আমার।
প্রশ্ন : চট্টগ্রাম ট্যুর কেমন ছিল?
উত্তর : শুধু ভালো বললে ভুল হবে, ফ্যান্টাসটিক ছিল। গ্যালারিতে দর্শক ভরপুর ছিল। চট্টগ্রামের দর্শকরা অনেক ভালোবাসা দিয়েছে। সত্যি বলতে, চট্টগ্রামের দর্শকদের ঢাকার মাঠে আমি মিস করছি। যদিও ঢাকার মাঠও ভরপুর।
প্রশ্ন : সমুদ্রসৈকত দেখা হয়েছে কি?
উত্তর : আমি আর আমব্রিন মিলে গিয়েছিলাম। এর আগে বাংলাদেশে সমুদ্রসৈকত দেখার সুযোগ আমার হয়নি। অসাধারণ ছিল সেই মুহূর্ত। অনেক আনন্দ হয়েছে। সমুদ্রসৈকতের পাশে অনেক শুঁটকি মাছ দেখেছি। খুব মজা লেগেছে।
প্রশ্ন : বিপিএলের উপস্থাপনা করতে কেমন লাগছে?
উত্তর : অন্যান্য উপস্থাপনের থেকে আলাদা বটে। ক্রিকেট অনেক সিরিয়াস খেলা। খেলা ও উপস্থাপনা খুব উপভোগ করছি। এ ছাড়া চ্যানেল নাইন অনেক হেল্পফুল। তানভীর খান, মাহফুজ তাঁরা দারুণ মানুষ। বিপিএলে উপস্থাপনা করতে এসে একবারও মনে হয়নি ঘরের বাইরে আছি।
প্রশ্ন : এই দেশকে ঘর মনে করছেন কিন্তু কোন খারাপ অভিজ্ঞতা রয়েছে কি?
উত্তর : না, নেই। তবে ঢাকার ট্র্যাফিক জ্যাম আমার অপছন্দ। এ দেশের পড়াশোনা, সংগীত, সংস্কৃতি অনেক ভালো। আমি তো আগেই বলেছি এখানকার মানুষও অসাধারণ। কিন্তু সবাই যদি ট্র্যাফিক নিয়ম-কানুন মেনে চলত! কারণ দেশটা অনেক সুন্দর। এই সুন্দর দেশে জন্মগ্রহণ করে কেন তুমি রাস্তার মাঝে প্যাকেট ফেলবে? কেন রাস্তা নোংরা করবে? দেশটা সুন্দর রাখা তো তোমারই দায়িত্ব।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের গান অনেক প্রিয় বলছিলেন। কার গান শুনতে বেশি ভালো লেগেছে?
উত্তর : বাংলাদেশের গানের তো কোনো তুলনাই হয় না। ‘ভালো আছি, ভালো থেকো’ গানটি আমার প্রিয় গানগুলোর মধ্যে একটি। এ ছাড়া আই লাভ আইয়ুব বাচ্চু, মমতাজ ও জেমসের গান।
প্রশ্ন : জেমসের সঙ্গে আপনি তো একটা বিজ্ঞাপনও করেছিলেন?
উত্তর : আমরা একটা এনার্জি ড্রিংকের বিজ্ঞাপন করেছিলাম। সেটা অনেক বছর আগে। কলকাতায় বিজ্ঞাপনটির শুটিং হয়েছিল। খুব দারুণ ছিল সেই মুহূর্ত।
প্রশ্ন : মডেলিং, অভিনয় ও উপস্থাপনা কোনটা কাছে বেশি টানে?
উত্তর : অবশ্যই উপস্থাপনা। যেমন এখন আমি বিপিএলকে রেপ্রিজেন্ট করছি। এখন আমি বিপিএল গার্ল। কোনো জিনিস রেপ্রিজেন্ট করতে পারাও তো ভাগ্যের ব্যাপার। আমি মাঠে খেলছি না, তবু লোকে আমাকে চেনে। আমি মাঠে গেলে সবাই পামেলা পামেলা বলে চিৎকার করে। এ ছাড়া সবাই আমার সঙ্গে ছবি তুলতে চায়, অটোগ্রাফ চায়। এই ভাগ্য কজনের হয় বলুন! আমি খেলা যেমন পছন্দ করি, তেমনি চলচ্চিত্র দেখতেও।
প্রশ্ন : বিপিএলের আসরে আবারও আপনাকে দেখা যাবে কি?
উত্তর : যদি, বাংলাদেশ চায় তাহলে কেন নয়! আমি তো চাই।