‘এফএমে হিন্দি গানের অনুরোধ বেশি আসে’

‘২০০৬ সালের দিকে রেডিওতে যাঁরা কাজ করতেন তাঁদের মধ্যে অনেক আবেগ ছিল। কিন্তু এখন যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে অনেক বেশি পেশাদারিত্ব চলে এসেছে। তবে একটা কথা না বললেই নয় তা হলো, এখনকার আরজেরা কাজের থেকেও বেশি মনোযোগ দেন তাদের ফ্যান ফলোয়ার বাড়ল কিনা সেদিকে!’ কথাগুলো বলছিলেন রেডিও নেক্সট ৯৩.২ এফএমের সিনিয়র আরজে সৈয়দা লতিফা শারমিন। রেডিও নেক্সটের সঙ্গে সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের আড্ডায় তিনি এসব কথা জানান। এই আড্ডায় আরো যোগ দিয়েছিলেন আরজে রাকিব, রাজভী, নাহিয়ান ও শান্তু।
সৈয়দা লতিফা শারমিন বলেছিলেন, ‘এখনকার আরজেরা ফ্যান-ফলোয়ারের দিকে বেশি নজর দেন।’ এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আরজে শান্তু বলেন, ‘এটা একদম ভুল বলেননি শারমিন আপু। তিনি অনেক সিনিয়র। যেহেতু আমরা অনেক তরুণ তাই আমাদের মধ্যে স্টার হওয়ার প্রবণতা একটু বেশি। তবে আমি কাজকেও প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করি।’
শান্তুর কথার সঙ্গে মিলিয়ে আরজে রাজভী বলেন, “আমার মধ্যে পেশাদারিত্ব বেশি। জানি না কতখানি পেরেছি বা পারছি। আমি আর রাকিব মিলে ‘হেডলাইট’ শিরোনামে একটি শো করছি। শোতে আমরা মজা করার মধ্য দিয়ে সমাজের অন্ধকার দিকগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করি। শ্রোতাদের কাছ থেকে আমরা সাড়াও পাচ্ছি অনেক।’
‘হেডলাইট’ নিয়ে আরজে রাকিব বললেন, ‘আমরা শো তে বসার আগে আলাদা কোনো পরিকল্পনা করে রাখি না। অন্য দশটা মানুষের মতো অফিসে আসার সময় আমরা দুজন লেগুনা অথবা বাসে করে আসি। বাসে বা লেগুনায় বসে সাধারণ মানুষের ভাবনাগুলো জানতে পারি। আর সেই ভাবনাগুলোকে নিয়েই আমরা শোটা করার চেষ্টা করি মাত্র। সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নিয়ে আমরা মূলত শো করি।’
এদিকে রেডিওতে বিষয়ভিত্তিক অনেক শো থাকলেও রেডিওর মূল প্রাণ গান, এমনটিই ভাবেন সৈয়দা লতিফা শারমিন। তিনি বলেন, ‘গান ছাড়া একটা রেডিও চালানো অসম্ভব। আমরা রেডিওতে সব ধরনের গান বাজিয়ে থাকি। বরেণ্য ও জনপ্রিয় শিল্পীদের পাশাপাশি নতুন শিল্পীদেরও গান বাজাই আমরা। শ্রোতারা নতুনদেরও গান শুনতে চায়। কিন্তু সেই তুলনায় আমাদের দেশে এখন ভালো গান খুব কম তৈরি হচ্ছে।’
রেডিওতে কী ধরনের গানের অনুরোধ বেশি আসে জানতে চাইলে লতিফা শারমিন বলেন, ‘খুব দুঃখজনক হলেও সত্যি এফএমে হিন্দি গানের অনুরোধ বেশি আসে।’ এ কথায় একমত হলেন বাকি সব আরজে। রাজভী বলেন, ‘একদম সত্য। অনেক সময় দেখা যায় যে, হিন্দি গানের অনুরোধ বেশি এলে আমরাই শ্রোতাদের পালটা অনুরোধ করি বাংলা গান শোনার জন্য। তখন অনেক শ্রোতা আমাদের এই অনুরোধ রাখেন।’
শারমিন, রাজভী, শান্তু ও রাকিবের সঙ্গে আড্ডার সময় রেডিওতে অন-এয়ারে বসে ছিলেন আরজে নাহিয়ান। এক ফাঁকে তিনিও আড্ডায় যোগ দিলেন। বললেন, ‘শুধু একটা কথাই বলতে চাই, রেডিওতে কাজ করার সুযোগ পেয়ে অনেক খুশি আমি। দারুণ উপভোগ করছি।’
নাহিয়ানের কথার সঙ্গে সুর মেলালেন শারমিনও। তিনি বললেন, ‘মাইক্রোফোন আমাকে খুব টানে। রেডিও নেক্সট একেবারে নতুন। আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো, তরুণদের কাছে ভালোভাবে পৌঁছানোর জন্য। তারা যেন বাংলা গান বেশি বেশি শোনেন। সেই সঙ্গে আমাদের শোগুলো শুনেও যেন তাঁরা অনুপ্রাণিত হন। এই চেষ্টায় আমরা কাজ করছি। রাজভী, শান্তু, রাকিব, নাহিয়ান ছাড়া ফারহান, রবিন, আরমিন, অহনা, নাবিলা ও মৌমিতাও আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন।’
২০১৫ সালের ৬ মে রেডিও নেক্সটের যাত্রা শুরু হয়। মহাখালীতে অবস্থিত ১১ জন আরজে নিয়ে শুরু হয় এই প্রজন্মের রেডিওটি। এখানে ক্রিয়েটিভ প্রযোজক হিসেবে রয়েছেন পাভেল মোরশেদ।