আটকে আছে নায়ক মান্নার ‘লীলা মন্থন’

বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক মান্না। তাঁর সর্বশেষ ছবি ‘লীলা মন্থন’ আটকে আছে সেন্সরবোর্ডে। মৃত্যুর তিন বছর আগেই এই ছবির কাজ শেষ করেছিলেন তিনি। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন যৌথভাবে জাহিদ হোসেন ও খোরশেদ আলম খসরু। ছবিটি প্রযোজনা করেছে টিওটি ফিল্মস। মান্না বেঁচে থাকতেই ছবির অধিকাংশ কাজ শেষ হয়। এর পর পোস্ট প্রোডাকশনের কিছু কাজ শেষ করে ছবিটি জমা দেওয়া হয় সেন্সরবোর্ডে। এ বছরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে ছবিটি মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেন্সরবোর্ডের ছাড়পত্র না পাওয়ায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে চলচ্চিত্রটির ভবিষ্যৎ।
ছবির দুজন পরিচালকের একজন খোরশেদ আলম খসরু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে ছবিটি তৈরি করেছি। ছবিতে আমরা চেষ্টা করেছি মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের বাস্তবচিত্র তুলে ধরতে। এটি যৌনকর্মীদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের কাহিনী নিয়ে নির্মিত হয়েছে। যৌনকর্মীরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন।’
সেন্সরবোর্ড ছবিটির অনুমতি দেয়নি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, ‘বোর্ড ছবিটি দেখে বলেছিল, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে একটি অনুমতিপত্র নিতে হবে। আমরা প্রথমে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দুজন প্রতিনিধিকে দেখাই। ছবিটি সম্পর্কে তাঁরা মৌখিকভাবে অনাপত্তি জানান। এর পর ছবিটি সেন্সরবোর্ডে জমা দিলে তাঁরা অনাপত্তির বিষয়টি লিখিত চান। লিখিত অনুমতি আনতে গেলে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান অনাপত্তিপত্র দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আমরা আবার সেন্সরবোর্ডের কাছে আবেদন করি। তাঁরা আমাদের বলেন যৌনপল্লীর দৃশ্যগুলো বাদ দিয়ে আবার জমা দিতে।’
সেন্সরবোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী কি তাহলে ছবির এই যৌনপল্লীর অংশ বাদ যাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে খসরু বলেন, ‘আমাদের গল্পের মূল বিষয়টিই এই যৌনপল্লীকে ঘিরে। যৌনকর্মীরা কীভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, সেটাই আমাদের ছবির গল্প। যে অংশ কেটে বাদ দিতে বলা হচ্ছে, সেটি বাদ দিলে ছবির কিছুই থাকে না। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ স্বাধীন করার জন্য সকলেই হাতে অস্ত্র নিয়েছিল। বাংলাদেশে এমন অনেক যৌনপল্লী, যেখানে যৌনকর্মীরা মুক্তিযুদ্ধে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। সুতরাং এই অংশ আমরা বাদ দিতে পারব না। আগামী মাসে আমরা আবার সেন্সরবোর্ডের অনুমতির জন্য আপিল করব।’
‘লীলা মন্থন’ ছবিতে মান্না ছাড়াও অভিনয় করেছেন মৌসুমী, শাহনূর, পপি, মুক্তি, দিঘি, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, আনোয়ারা, শহিদুল আলম সাচ্চু, মিশা সওদাগরসহ আরো অনেকে। ছবিটির সংগীত পরিচালনা করেছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।