দ্বৈত ও অদ্বৈতের আখ্যান, ‘গহনযাত্রা’র দ্বিতীয় মঞ্চায়ন

দেশের অন্যতম প্রধান নাট্য সংগঠন পদাতিক নাট্য সংসদ (টিএসসি)। সংগঠনটি সম্প্রতি পৃথিবীজুড়ে গণহত্যা, রক্তপাত ও বিপরীতে মানবতার গল্প নিয়ে মঞ্চে এনেছে একটি একক অভিনয়ের নতুন নাটক ‘গহনযাত্রা’।
বিশেষ করে এ নাটকটিতে ধর্মের নামে ভিন্নমত দমনে পৃথিবীর নানা প্রান্তে নির্মম হত্যাযজ্ঞ ও মানবতার চরম অবমাননার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নাটকটিতে ‘সালমা’ চরিত্রে একক অভিনয় করেছেন শামসি আরা সায়েক।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে হয়ে গেল এই নাটকটির দ্বিতীয় মঞ্চায়ন।
আধুনিক বর্ণনামূলক এবং ইউরোপীয় ধারার মিশ্রণে নির্মিত এই নাটকটির কাহিনীতে দেখা যায়, এই ভূখণ্ডের কোনো এক স্থানে জন্ম নেয় উগ্রপন্থা। সেই উগ্রপন্থার অনুসারীরা বিপরীত সব মতবাদ প্রত্যাখ্যান করে শুধু একটি মতবাদকেই প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ জন্য তারা চালায় ধ্বংসলীলা বইয়ে দেয় রক্তগঙ্গা, হত্যা করে অগণিত মানুষ, ধর্ষিত হয় অসংখ্য নারী। ভিন্ন মতাদর্শের এক ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের মানুষদের তারা ধরে নিয়ে বন্দি করে রাখে। বন্দিদশা থেকে পালাতে চায় অনেকে। কিন্তু মারা পড়ে তারা। শুধু একজন বেঁচে যায়। সালমা।
কিন্তু বেঁচে গিয়ে ফিরে আসে সালমা, খোলা প্রান্তরে পড়ে থাকা লাশগুলো সমাহিত করবে বলে। এ সময়ে সালমা নিজের অভ্যন্তরে টের পায় অপর কারো অস্তিত্ব। সেই অস্তিত্ব হয়তো তারই বর্ধিত কোনো রূপ কিংবা অপরূপে সে নিজেই অথবা অন্য কিছু। সালমা নিজের ভেতরে এ নতুন অস্তিত্ব নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হলেও সেই অস্তিত্ব সঙ্গী হয় তার; আর ‘গহনযাত্রা’ হয়ে ওঠে দ্বৈত ও অদ্বৈতের আখ্যান। এভাবে এগিয়ে চলে নাটকটির কাহিনী।
পদাতিক নাট্য সংসদের ৩৯তম প্রযোজনার এই নাটক রচনা করেছেন তরুণ নাট্যকার ও অভিনেতা রুবাইয়াৎ আহমেদ। নির্দেশনা দিয়েছেন সুদীপ চক্রবর্তী।