মঞ্চনাটক
‘অলিখিত উপাখ্যান’-এর তৃতীয় প্রদর্শনী

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মঞ্চে আগামী শনিবার, ১২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চায়ন হবে বাতিঘর প্রযোজিত মঞ্চনাটক ‘অলিখিত উপাখ্যান’-এর তৃতীয় প্রদর্শনী। জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক রিজিয়া রহমানের একটি উপন্যাসকে নাট্যরূপ দিয়েছেন নির্দেশক মুক্তনীল।
নাট্যব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর প্রথম এই নাটকে কত্থকের ভূমিকায় কণ্ঠ দিয়েছেন। কথাসাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ডায়েরির পাতায় লেখা হয়েছিল ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবীর বীরত্বগাথার কথা। সেখানে উল্লেখিত তথ্যের ভিত্তিতে রিজিয়া রহমান লিখেছিলেন ‘অলিখিত উপাখ্যান’ নামের উপন্যাস। আর উপন্যাসটিকে আশ্রয় করে ঢাকার মঞ্চে যুক্ত হলো আরেকটি নতুন নাটক। এটি নাট্যদল বাতিঘরের দ্বিতীয় প্রযোজনা।
‘অলিখিত উপাখ্যানে’ উঠে এসেছে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অজানা এক দৃশ্যপট। গত নভেম্বর থেকে চলছিল নাটকটির মহড়া। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ডায়েরি থেকে ইতিহাস চাপা পড়া যে ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবীর নাম পাওয়া যায়, তিনি রহিমউল্লাহ। নীল বিদ্রোহ-পরবর্তী সময়ে খুলনা অঞ্চলের সরালীয়ায় ইংরেজ জমিদারদের শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এই রহিমউল্লাহকে ঔপন্যাসিক রিজিয়া রহমান হারানো ইতিহাস থেকে তুলে এনেছেন উপন্যাসে।
এই উপাখ্যান সেই সময়ের ইংরেজ বেনিয়াদের শোষণের আখ্যান। কালো মানুষগুলোর মার খেতে খেতেও গর্জে ওঠার আখ্যান। চারদিকে উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা মোরেল কুঠিতে কিছু সাদা চামড়ার মানুষের অমানবিক অত্যাচার দেখে আহত হয় তাদেরই একজন, মোরেল পরিবারের ছোট মেয়ে অ্যানা। কিন্তু তাতে বিন্দুমাত্র ভ্রূক্ষেপ না করেই প্রজাদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালিয়ে যেতে থাকে ছোট জমিদার হেনরি মোরেল ও তার সহযোগী ম্যানেজার জেমস হেইলি। চাষিদের দিয়ে জোর করে অথবা মিথ্যা মামলা দিয়ে কয়েদি বানিয়ে ধরে নিয়ে গিয়ে সুন্দরবন কেটে আবাদ করানোর প্রতিবাদে ও গ্রামের লোকের একমাত্র বিনোদনের উৎস কালাচাঁদ ফকিরের মেলা বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে কৃষক বিপ্লবী রহিমউল্লাহ ও তার দল।
নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারানা তাবাচ্ছুম চেরি, মনিরুজ্জামান ফিরোজ, সাফিন আহম্মেদ অশ্রু, সাদ্দাম রহমান, সাবরিনা শারমিন, ফয়সাল, সাদিয়া ইউসুফ বৃতা, তাজিম আহমেদ শাওন, সঞ্জয় গোস্বামী, রুম্মান শারু, সঞ্জয় হালদার, শিশির সরকার, পরশ, শাম্মি মৌ, তানি, তন্ময় প্রমুখ। মঞ্চ পরিকল্পনা, পোস্টার ও প্রচ্ছদ করেছেন এম আসলাম লিটন, আলোক পরিকল্পনায় পলাশ হেনন্ড্রি সেন, কস্টিউম ও প্রপস তাজিম আহমেদ শাওন ও শাম্মি মৌ, কোরিওগ্রাফি শিশির সরকার, সংগীত সাদ্দাম রহমান ও সংগীত প্রক্ষেপণে অপূর্ব দে।