বিশ্ব আর্থ্রাইটিস দিবস : কাদের ঝুঁকি বেশি?
আজ বিশ্ব আর্থ্রাইটিস দিবস। আর্থ্রাইটিস নামে পরিচিত এই বাতরোগ মূলত অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টের প্রদাহ। এটি এক বা একাধিক জয়েন্টকে আক্রান্ত করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি প্রবীণদের মধ্যে দেখা যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজনের একজন এই রোগে আক্রান্ত। প্রদাহের কারণভেদে এ রোগটিকে সাধারণত ওসটিওআর্থ্রাইটিস (osteoarthritis), রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস (rheumatoid arthritis), স্পন্ডাইলার আর্থ্রোপ্যাথিস (spondylar arthropathies), গেঁটেবাত (gout), সংক্রমণজাত আর্থ্রাইটিস (infective arthritis), জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস (juvenile arthritis) ইত্যাদি দলে ভাগ করা হয়।
উপসর্গ
আর্থ্রাইটিসে তরুণাস্থি ক্ষয় হয়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। শরীরের যেকোনো হাড়ের জয়েন্টে এ রোগ হতে পারে, তবে ভার বহনকারী জয়েন্টে হওয়ার আশঙ্কা বেশি। এ রোগের উপসর্গ হলো ঘাড়ে, কাঁধে, পিঠে, কোমরে বা মাজায় অসহ্য ব্যথা হওয়া। ঘাড় ঘোরাতে, শরীর বাঁকাতে এবং হাঁটাচলা করতে প্রচণ্ড অসুবিধা হতে পারে। এ ছাড়া হালকা জ্বর, ক্ষুধামান্দ্য এবং ওজন কমে যাওয়ার সমস্যা হয়।
রোগ হওয়ার ঝুঁকি কাদের বেশি?
অতিরিক্ত ওজনের মানুষ
উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের ওজন ঠিক রাখতে না পারলে মেদ সাধারণত কোমরে জমে। এই অতিরিক্ত ওজন বা মেদকে বহন করার শক্তি আমাদের পৃষ্ঠদেশ কিংবা হাঁটুর জয়েন্টের থাকে না। আর সেখান থেকেই শুরু হয় ব্যথা।
অতিরিক্ত ওজনের শিশু
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের ৪১ মিলিয়নের বেশি শিশুরই বয়সের তুলনায় ওজন বেশি। স্থূল শিশুদের আর্থ্রাইটিস বা বাতের ঝুঁকি বেশি।
সামুদ্রিক মাছ কম খাওয়া
গবেষণায় দেখা যায়, সামুদ্রিক মাছ কম খাওয়া মানুষের মধ্যে বাত রোগের ঝুঁকি বেশি। তাই সপ্তাহে দুদিন টুনা, স্যামন, ইলিশ বা কোরাল মাছ খেলে বাতকে দূরে রাখা সম্ভব।
ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম না করা
যাঁরা কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়াম কম করেন, তাঁদের আর্থ্রাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
পেশাগত চাপ
কিছু পেশায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, আবার কিছু পেশায় সারা দিন বসে থাকতে হয়। এসব পেশার লোকের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া যারা ভারী কাজ করে, তাদেরও এই সমস্যা হতে পারে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা।