শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য, কী করবেন?

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে শিশুদের অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়, এটি কীভাবে প্রতিরোধ করবেন—এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. সালমা সুলতানা। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৩৩৮ এ নিয়ে কথা হয়।
প্রশ্ন : সাধারণত দেখা যায়, দেড় থেকে দুই বছরের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা শুরু হয়। যেহেতু সে সময় বাড়তি খাওয়া শুরু করে। এটি কেন হয়? এটি থেকে প্রতিরোধের উপায় কী?
উত্তর : আসলে এই সময়ের আগেও হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য। অনেক সময় দেখবেন, মায়ের দুধ খেলে অনেক শিশুর পায়খানা স্বাভাবিক হয়। আবার অনেক বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।
আবার যখন সে বাড়তি খাবার খেতে শুরু করে ছয় সাত মাসের পর থেকে, তখনই যদি খিচুড়ি বা এসব খাবারের মধ্যে আঁশের পরিমাণ কম থাকে তখনো কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়। দেখা গেল, চাল-ডাল এসব দিলেন, মাংসও দিলেন, তবে সবজিটা দেওয়া হলো না। তখন সমস্যাটা হয়।
এ ছাড়া বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সুজি খাওয়ানোর একটি প্রবণতা থাকে। আসলে তো সুজি থেকে কোনো পুষ্টি আসে না। বরঞ্চ সেখানে যদি কিছু সবজি যোগ করা যায়—একটু শাক, একটু মিষ্টি কুমড়া, যেটা সহজে হজম হয়, তাহলে ভালো হয়। পাশাপাশি বাচ্চা ঠিকমতো পানি পান করছে কি না, সেটি খেয়াল রাখতে হবে।
আরেকটি কারণ রয়েছে। বাচ্চাদের অনেক সময় টয়লেট প্রশিক্ষণটা ঠিকমতো হয় না। প্রতিদিন পায়খানা করতে হবে—এই বিষয়টিতে শিশুকে প্রশিক্ষণ দেওয়া মা বা বাবার দায়িত্ব। অভ্যাসগত কারণেই অনেক বাচ্চা বসতে চায় না।
অনেক বাচ্চা পায়খানা করতে ভয় পায়, ঝামেলা মনে করে বা লুকোনোর জিনিস মনে করে। পায়খানা এলে বাচ্চা যদি চেপে রাখে, পরে করে, তখন কিন্তু পায়খানাটি শক্ত হয়ে যায়।
প্রশ্ন : এই প্রশিক্ষণটা কখন করানো উচিত?
উত্তর : খাওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময় বাচ্চাকে বসাবে। একবার যদি পায়খানা একটু শক্ত হয়ে যায়, বাচ্চা যদি পায়খানা করতে গিয়ে ব্যথা পায়, তখন তার মানসিকভাবে ভয় হয়। সে ভাবে, টয়লেট করলে ওই জায়গায় ব্যথা হবে। তখন বাচ্চা এটিকে আরো লুকাতে থাকে। এই বিষয়ে বাবা-মায়ের খেয়াল রাখতে হবে।
প্রশ্ন : এ রকম হলে কি কোনো রোগ হয়?
উত্তর : এতক্ষণ তো বললাম ছোট বাচ্চাদের কথা, যারা বাসায় আছে। তবে আরেকটি রয়েছে—যখন বাচ্চারা স্কুলে যায়, সকাল বেলা, স্কুল হয়তো ৮টায় শুরু হয়, বাচ্চারা অনেক সময় অভ্যস্ত থাকে না ৮টায় ওঠার। সকালে উঠে স্কুলে যায়, দেখা যায়, পায়খানা হয় না। ক্লাসে যখন তার পায়খানার চাপ আসে তখন লজ্জায়, অস্বস্তিতে বলে না। তখন পায়খানা আটকে রাখে। পরে বাসায় এসে যখন করে, ব্যথা পায়, সেখান থেকেও সমস্যাটি তৈরি হয়। শক্ত পায়খানা যখন বের হয়, মলদ্বার ছিঁড়ে যায়। সেটা খুব ব্যথাপূর্ণ। সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হয়।
কেবল বাচ্চা কেন, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও এটি কিন্তু ভয়ংকর বিষয়। একে আমরা বলি এনাল ফিসার।