প্রতিদিনের কোন তিন অভ্যাসে কিডনির ক্ষতি হয়?

অফিসে সারাদিন বসে কাজ করায় একে তো পেট-কোমরের মেদ বাড়ছে। তার উপরে শরীরচর্চার অভ্যাস নেই, পানি কম খাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে শরীরে নানাবিধ রোগ বাসা বাঁধতে থাকে কম বয়স থেকেই। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় কিডনির। এসব অভ্যাসের কারণে ক্রনিক কিডনির রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। কিডনিতে পাথরও জমছে। এর কারণই হলো দৈনন্দিন জীবনের কিছু খারাপ অভ্যাস। অনেকেই অজান্তেই সেই ভুলগুলো করে চলেছেন। ফলে কিডনির ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কম বয়স থেকেই। চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিনের যে তিন অভ্যাসে কিডনির ক্ষতি হয়।
অতিরিক্ত লবণ খাওয়া
কিডনি শুধু শরীর থেকে রেচন পদার্থই বরে করে না, তার ভূমিকা আরও বেশি। যেমন— রক্তে সোডিয়াম, পটাশিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে কিডনি। কিন্তু যদি সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন বিপত্তি ঘটবে। কেউ যদি প্রতিদিনের খাবারে বেশি পরিমাণে লবণ খাওয়া শুরু করেন, তাহলে কিডনি স্টোনের ঝুঁকি বাড়বে। প্রথমত রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় অতিরিক্ত সোডিয়াম। বলা হয়, কাঁচা লবণ খেলে সোডিয়ামের মাত্রা আরও বাড়ে। তাতে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সঙ্কটও বাড়ে। এরই পাশাপাশি, স্ট্রোক এবং হার্টেক অসুখের আশঙ্কাও বেড়ে যায় লবণ বেশি খেলে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, দিনে দেড় চা চামচের বেশি লবণ কারও খাওয়া ঠিক নয়। এই পরিমাণ লবণে থাকে ৩৪০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম। এর চেয়ে বেশি সোডিয়াম শরীরে গেলে কিডনির ক্ষতি হবে।
মুঠো মুঠো ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর, বিশেষ করে কিডনির। এনসেড বা নন-স্টেরয়ডাল অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি গোত্রের ওষুধ। যেমন- ডাইক্লোফেনাক, অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন ইত্যাদি। চিকিৎসকরা বলেন, ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসককে দেখানো খুব জরুরি। ডোজ না জেনেই যদি বেশি মাত্রায় ব্যথানাশক ওষুধ খেলে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যাবে। তাই ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
মিষ্টিমিশ্রিত পানীয়
চিনিযুক্ত পানীয়ের প্রতি আমাদের আকর্ষণ স্বাভাবিক হলেও, তা কিডনির জন্য ক্ষতিকর। পুষ্টিবিদদের মতে, বেশি মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা হলে তার পরিবর্তে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিন, শুরুকে একটু সমস্যা হলেও ধীরে ধীরে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। আবার কারও মিষ্টি মিল্ক শেক খেতে ইচ্ছা হলে, এর পরিবর্তে গ্রিন টি, ভেষজ চা পান করাই ভালো। কালো কফিও ‘সুগার ক্রেভিং’ কমাতে পারবে।