সারার পোশাকে ব্যাপক সাড়া
২০১৮ সালের মে-তে যাত্রা শুরু করেছিল ফ্যাশন ব্র্যান্ড সারা লাইফস্টাইল লিমিটেড। দেখতে দেখতে দুই বছর পার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এরই মধ্যে ফ্যাশন সচেতন মানুষের মনে বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছে সারার পোশাক। শুধু শোরুমেই নয়, অনলাইনেও বিক্রি ভালো। যদিও স্বাভাবিক সময়ের সঙ্গে এই করোনাকালের তুলনা চলে না।
মহামারি করোনার প্রকোপে অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে পুরো বিশ্বেই। লকডাউন, হোম কোয়ারেন্টিন, সেলফ-আইসোলেশন—এমন নানা শব্দ আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে মানুষকে। বাঙালির নানা পালা-পার্বণ, পবিত্র দুই ঈদ ও পূজার সময়গুলোতে পোশাকের রঙেও আসে ভিন্নতা। রয়েছে ষড়ঋতুর বৈচিত্র্য। ঋতুবৈচিত্র্যের সঙ্গে রঙের খেলা ফুটে ওঠে পোশাকেও। তাই সারা বছরই নানা ভাবনার আভায় উজ্জ্বল হয় আমাদের পোশাক।
করোনার কারণে গেল বৈশাখে খুব একটা বিক্রিবাট্টা হয়নি সারার। তবে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান স্নোটেক্সের পণ্য বলেই কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে এ প্রতিষ্ঠান। আর্থিক ক্ষতি হলেও তা মেনে নিতে হয়েছে। সারা লাইফস্টাইল লিমিটেডের পরিচালক শরীফুন নেসা রেবা জানান, করোনা সব কিছুই ওলট-পালট করে দিয়েছে। তাঁদের পরিকল্পনামাফিক কিছুই হয়নি। তবে এ সংকট যেহেতু দেশের তথা পুরো বিশ্বের, তাই মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।
দুই বছরে সারার আউটলেটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচটি। রাজধানীর বসুন্ধরা, মিরপুর, উত্তরা, বারিধারা ও মোহাম্মদপুরে রয়েছে তাঁদের শোরুম। তবে করোনার কারণে বসুন্ধরা আউটলেট বন্ধ। বাকি চারটি খোলা। কোভিড-১৯-এর এই প্রাদুর্ভাবের সময় স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও নিরাপত্তা বজায় রেখে সারার চার আউটলেটে পাওয়া যাচ্ছে পছন্দের পোশাক। এ ছাড়া অনলাইনে অর্ডার দিলেই হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা তো রয়েছেই।
এনটিভি অনলাইনকে শরীফুন নেসা রেবা বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যেই সারা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। উদ্বোধনের প্রথম বছরও ব্যবসা ভালো ছিল। দ্বিতীয় বছরে পোশাক বিক্রি আরো বেড়েছে। বাণিজ্যমেলায় আমাদের স্টল ছিল। সেখানে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। এককথায় বলতে পারি, সারা অল্প সময়ে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে।’
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সারার পোশাক কেমন বিক্রি হচ্ছে? উত্তরে রেবা বলেন, ‘আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি। সারার চারটি আউটলেটে ক্রেতার সংখ্যা বেশ ভালো। অনলাইনে প্রচুর অর্ডার। হোম ডেলিভারি দিচ্ছি। আমরা বড় ই-কমার্স টিম করেছি। করোনার কারণে যেহেতু স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় মানুষ কম বাইরে বের হচ্ছেন, তাই অনলাইনে বেশি বিক্রি হচ্ছে। শোরুমেও ক্রেতা রয়েছে। তবে এটা তো সত্যি, স্বাভাবিক সময়ের সঙ্গে তুলনা চলে না।’
২০০০ সালে বায়িং হাউজের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে স্নোটেক্স। আজকের স্নোটেক্স হয়ে উঠেছে চারটি বড় কারখানার একটি প্রতিষ্ঠান রূপে। স্নোটেক্স ২০০৫ সালে নিজেদের প্রথম কারখানা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে স্নোটেক্স অ্যাপারেলস। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে কাট অ্যান্ড সিউ এবং ২০১৪ সালে স্নোটেক্স আউটারওয়্যার প্রতিষ্ঠিত হয়। স্নোটেক্স আউটারওয়্যার গ্রিন ফ্যাক্টরি হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে ইউএসজিবিসির লিড গোল্ড সার্টিফিকেটে। ২০১৯ সালে উদ্বোধন করা হয় চতুর্থ প্রতিষ্ঠান স্নোটেক্স স্পোর্টসওয়্যার। প্রতিষ্ঠানে এখন প্রায় ১৪ হাজার কর্মী কাজ করছেন। সারা লাইফস্টাইল লিমিটেড ও স্নোটেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদ।
সারা লাইফস্টাইল লিমিটেডের পরিচালক শরীফুন নেসা রেবা আরো জানান, বরাবরের মতো সারার ঈদ আয়োজনে গুণগত মান ও ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ঈদ আয়োজনে মেয়েদের জন্য রয়েছে পার্টি ওয়্যার সিঙ্গেল পিস, পার্টি ওয়্যার থ্রি-পিস, এক্সক্লুসিভ শাড়ি, প্রিন্টেড শাড়ি, কুর্তি, প্রিন্টেড থ্রি-পিস, ফ্যাশন টপস ও ডেনিম।
সারার ঈদ আয়োজনে ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি, ক্যাজুয়াল শার্ট, ফরমাল শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, চিনো প্যান্ট, জগার্স, কার্গো প্যান্ট, ডেনিম প্যান্ট ও পায়জামা।
এ ছাড়া শিশুদের জন্য রয়েছে ফ্রক, টপস, টপস-স্কার্ট সেট, টপস-বটম সেট, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, শার্ট-প্যান্ট সেট, বটমস, পাঞ্জাবি-পায়জামা, নিউ বর্ন-নিমা সেট। তবে ঈদ আয়োজনে এবার অন্যতম আকর্ষণ ফুল ফ্যামিলি কালেকশন পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস, শাড়ি, টি-শার্ট ও পোলো শার্ট।
সারার নিজস্ব ওয়েবসাইট (www.saralifestyle.com.bd), ফেসবুক পেজ (www.facebook.com/saralifestle.bd) এবং ইনস্টাগ্রাম (sara lifestyle ltd) থেকে ক্রেতারা ঢাকার ভেতরে অর্ডার দিয়ে এই ক্রান্তিলগ্নে হোম ডেলিভারি পেতে পারেন আর ঈদের আনন্দ একসঙ্গে উপভোগ করতে পারেন।