বয়স বাড়লেও পিছু ছাড়ছে না ব্রণ, লাইফস্টাইলে কী পরিবর্তন আনবেন?

সারা বছরই মুখে ব্রণ হয়। একাধিক নামিদামি প্রসাধনী ব্যবহার করেও সুরাহা মিলছে না। ব্রণের পিছনে আপনার লাইফস্টাইল বা ডায়েট দায়ী নয় তো? ব্রণ হওয়ার পিছনে নানা কারণ থাকতে পারে। বিশেষত বেশি বয়সে ব্রণ হলে বুঝতে হবে শরীরে কোনো গণ্ডগোল রয়েছে।
ব্রণ হওয়ার পিছনে কোন কোন কারণ দায়ী?
বয়ঃসন্ধিকালে ব্রণ হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তবে ইদানীং ৩০-এর দোরগোড়ায় পৌঁছেও ত্বকে ব্রণ উঠছে। বেশি বয়সের ব্রণকে বলা হচ্ছে অ্যাডাল্ট অনসেট অফ অ্যাকনি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, এই অ্যাডাল্ট অ্যাকনির পিছনে দায়ী লাইফস্টাইল।
ভারতীয় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কৌশিক লাহিড়ী বলেন, ‘যাদের ওজন অত্যাধিক বেশি, গায়ে বেশি লোম অথচ চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে কিংবা নারীদের ক্ষেত্রে পিসিওডি অথবা অনিয়মিত ঋতুচক্র, তাদের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যায় বড় বয়সের ব্রণ।’
ভুল খাদ্যাভ্যাসের জেরে কি ব্রণ হয়?
ব্রণ হওয়ার পিছনে ভুল খাদ্যাভ্যাসও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিবিদ অনুশ্রী মিত্র বলেন, ‘দেহে প্রদাহ তৈরি হলে, অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে, ঘন ঘন গ্যাস-অ্যাসিডিটিতে ভুগলে কিংবা রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে ব্রণ হতে পারে।’ এই ধরনের সমস্যায় শুধু প্রসাধনী মেখে ব্রণ দূর করা যায় না। পরিবর্তন আনতে হয় খাদ্যতালিকায়।
ব্রণ দূর করতে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন?
যেহেতু পেটের গণ্ডগোল, প্রদাহ, হাই সুগার এমন নানা কারণে ব্রণ হতে পারে, তাই ডায়েটে নজর দিতেই হবে। এমন কোনো খাবার খাওয়া যাবে না, যা এই ধরনের শারীরিক অবস্থাকে ট্রিগার করে। এক্ষেত্রে পুষ্টিবিদদের পরামর্শ হচ্ছে- সবার আগে জীবন থেকে চিনি বাদ দিন। চিনি রয়েছে এমন কোনো খাবারই খাওয়া উচিত নয়।
চিনির পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্যাকেটজাত খাবারও এড়িয়ে চলতে হবে। পুষ্টিবিদদের মতে, বর্তমানে ২৪-২৫ বছর বয়সিদেরও ব্রণ হয়, কারণ তারা বাড়ির তৈরি খাবার কম খান। বেশিরভাগই রাস্তার খাবার বা জাঙ্ক ফুড খেতে পছন্দ করেন। ব্রণ কমাতে হলে এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
যেসব খাবার খেলে নিখুঁত ও উজ্জ্বল ত্বক পাবেন
ত্বকের জেল্লা বাড়াতে হলে প্রসাধনীর পাশাপাশি ভালো খাবারই ভরসা রাখতে হবে। পুষ্টিবিদ অনুশ্রী বলেন, ‘সাধারণত মৌসুমী তাজা ফল ও শাকসবজি ত্বকের সমস্যা কমাতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর। ব্রণের সমাধান খুঁজলে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার ডায়েটে রাখতে হবে।’
আদা, হলুদ, গোলমরিচ, দারুচিনি— এই ধরনের মশলা ব্রণ তাড়াতে ভীষণ উপযোগী। এ ছাড়া প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে টক দই খেতে পারেন। ব্রণ দূর করতে হলে ডায়েটে জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবারও রাখতে হবে। এই উপাদান মূলত ত্বকের তৈলাক্ত ভাব নিয়ন্ত্রণ করে। এ ক্ষেত্রে কুমড়ার বীজ, চিয়া সিডস, আমন্ডের মতো বীজ ও বাদাম খেতে পারেন। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে।