স্থাপত্যশৈলীর অপূর্ব নিদর্শন টাঙ্গাইলের ২০১ গম্বুজ মসজিদ

টাঙ্গাইলের গোপালপুরের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে অবস্থিত এক বিস্ময়কর স্থাপত্য ২০১ গম্বুজ মসজিদ। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, পুরো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম। আর উচ্চতার দিক থেকে এটি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ২০১টি গম্বুজ ও ৯টি মিনার দিয়ে সজ্জিত একটি পূর্ণাঙ্গ মসজিদ কমপ্লেক্স হিসেবে এই মসজিদের নকশা তৈরি করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে এই মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মসজিদটি মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে নির্মিত। এ কাজের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের মা রিজিয়া খাতুন। মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হবে আনুমানিক ১০০ কোটি টাকা। মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ না হলেও নান্দনিক এই স্থাপত্যকলার মসজিদটি দেখতে ও নামাজ পড়তে দেশ-বিদেশ থেকে অনেক দর্শনার্থী নিয়মিত আসছেন। নির্মাণ শেষ হলে কাবার শরীফের ইমাম এসে নামাজের ইমামতি করে মসজিদটি উদ্বোধন করবেন।
পৃথিবীর ইতিহাসে কখনো এতো সংখ্যক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ তৈরি হয়নি। দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের ছাদে ৮১ ফুট উচ্চতার একটি গম্বুজ রয়েছে। বড় গম্বুজের চারপাশে ছোট ছোট গম্বুজ আছে ২০০টি। প্রত্যেকটির উচ্চতা ১৭ ফুট। মূল মসজিদের চার কোনায় রয়েছে চারটি মিনার। প্রত্যেকটির উচ্চতা ১০১ ফুট। পাশাপশি আরো চারটি মিনার রয়েছে ৮১ ফুট উচ্চতার। রয়েছে ৪৫১ ফুট উচ্চতার একটি মিনার, যা মসজিদের পাশেই অবস্থিত। ১৪৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪৪ ফুট প্রস্থের দ্বিতলা এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
মসজিদের দেয়ালের টাইলসে অঙ্কিত রয়েছে পূর্ণ পবিত্র কোরআন শরীফ। যে কেউ বসে বা দাঁড়িয়ে মসজিদের দেয়ালে অঙ্কিত কোরআন শরীফ পড়তে পারবেন। মসজিদের প্রধান দরজা নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে ৫০ মণ পিতল। আজান দেওয়ার জন্য মসজিদে উঁচু মিনার রয়েছে। সহস্রাধিক বৈদ্যুতিক পাখা যুক্ত করা হয়েছে, মসজিদটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
মসজিদ কর্তৃপক্ষ মো. আব্দুল করিম (প্রতিষ্ঠাতার ভাই) এনটিভি অনলাইনকে জানান, ২০১ গম্বুজ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের স্বপ্ন ছিল ব্যতিক্রম স্থাপনা তৈরি করা, যে স্থাপনা পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। সে স্বপ্নের আলোকে তার এ মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করা। কাবা শরীফের ইমাম এসে এটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে, দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে অনেক পর্যটক ও মুসল্লি এ মসজিদ দেখতে আসেন এবং ইবাদত করতে আসেন।
১৫ বিঘা জমির ওপর বিশাল মসজিদ ও মসজিদ কমপ্লেক্স অবস্থিত। শুধু মসজিদ নয়, এই কমপ্লেক্সে আছে বিনামূল্যের হাসপাতাল, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, লাশ রাখার হিমাগার ও দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন কেন্দ্র, রয়েছে একটি হেলিপ্যাড।