কর অব্যাহতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি : এনবিআর চেয়ারম্যান

পুঁজিবাজারে যত কর সুবিধা দেওয়া হয়েছে, বাজারে তার বেনিফিট দেখছি না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, কর অব্যাহতির বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। এই অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে বেড়িয়ে যাব।
সোমবার (১৭ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে প্রাক বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। এ সময় পুঁজিবাজারের উন্নয়ন স্বার্থ উল্লেখ করে বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ), অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ ও মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন।
সারাজীবন কর অব্যাহতি দিলাম, কিন্তু তার রেজাল্ট তো আসে না মন্তব্যে করে চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, সবার ট্যাক্স হলিডে চাচ্ছে। সবাই কেন কর অব্যাহতির কথা বলে। সবার জন্য বলছি, কর অব্যাহতির দিতে চাই না। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসবো। কর অব্যাহতি দিতে দিতে নিম্ন কর জিডিপি অনুপাত থেকে বের হতে পারছি না। আমাদের বদনাম হয়ে গেছে। আমরা যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় করি, তার সমপরিমাণ অব্যাহতি থাকে। এতে কাঙ্খিত রাজস্ব আহরণ হচ্ছে না।
কর সুবিধা দেওয়ার পরও বিনিয়োগকারী পুঁজি হারাচ্ছে জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারে যত কর সুবিধা দেওয়া হয়েছে, বাজারে তার বেনিফিট দেখছি না। গত ২০ বছর ধরে, যারা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে তারা তাদের পুঁজি ৭ থেকে ১৫ শতাংশ হারিয়েছে। আমার কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে বের হচ্ছি। আমরা পণ করেছি অব্যাহতি আর দিবো না। কর অব্যাহতির বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করেছি।
বাজেট আলোচনায় ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) মূলধনী আয়ের উপর করহার ১৫ শতাংশের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। এছাড়া কর রেয়াতের পরিমাণ অপরিবর্তিত রেখে বিনিয়োগ সীমা বৃদ্ধি, ভাল মৌলভিত্তিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করতে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান কমপক্ষে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়।
কোন স্বাভাবিক ব্যক্তি কর্তৃক মূলধনী মুনাফার ওপর সম্পূর্ণ কর অব্যাহতি প্রস্তাব রাখে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। এছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের কাছ থেকে উৎসে করহার হ্রাস, উৎসে লভ্যাংশ আয়ের ওপর কর হ্রাস এবং চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হিসাবে বিবেচনা করা, তালিকাভুক্ত বন্ড থেকে অর্জিত আয় বা সুদের ওপর কর অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ তাদের বাজেট প্রস্তাবনায় লভ্যাংশ করের ওপর দ্বৈত করের বিধান প্রত্যাহার করে লভ্যাংশ আয়কে করমুক্ত করা, তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের ব্যবধান শর্ত ছাড়াই ১০ শতাংশ করা, নির্ধারিত বার্ষিক মোট নগদ ব্যয় ও বিনিয়োগ এ সীমা ৩৬ লাখ টাকার স্থলে মোট ব্যবসায়িক টার্নওভারের ১০ শতাংশ করা, এসএমই ও এটিবি এ তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির প্রথম তিন বছরের জন্য কর অব্যাহতি দেওয়া, করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে।