ভারতে চলছে মুস্তাফিজ বন্দনা

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খুব কম সময়ই আলোচনায় আসতে পারেন বোলাররা। আর যে ম্যাচে ব্যাটসম্যানরা ২২৭ রানের পাহাড় গড়েন, সেই ম্যাচ শেষে বোলারদের শুধু সান্ত্বনা জানানো ছাড়া আর কী-ই বা বলার বা লেখার থাকে! বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স, শেন ওয়াটসনদের মতো মারমুখী ব্যাটসম্যানদের সামনে পড়ে ঠিক এই অবস্থাই হয়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বোলারদের। কিন্তু একমাত্র ব্যতিক্রম মুস্তাফিজুর রহমান। বোলারদের দুঃস্বপ্নের রাতেও দুর্দান্ত বোলিং করে প্রশংসা কুঁড়িয়েছেন বাংলাদেশের এই তরুণ বাঁ-হাতি পেসার। আইপিএলের অভিষেক ম্যাচেই দারুণ বোলিং করায় ভারতীয় গণমাধ্যমে শুরু হয়েছে মুস্তাফিজ-বন্দনা।
কোহলি আর ডি ভিলিয়ার্সের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সামনে পড়ে ‘ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা হয়েছিল ভারতের দুই পেসার আশিস নেহরা ও ভুবনেশ্বর কুমারের। অস্ট্রেলিয়ান পেসার মোইসেস এনরিকেও দিয়েছেন ওভারপ্রতি দশের ওপর রান। শুধু মুস্তাফিজের সামনেই থমকে যেতে হয়েছে কোহলি-ডি ভিলিয়ার্সকে। মুস্তাফিজের প্রথম স্পেলের দুই ওভারে তাঁরা নিতে পেরেছিলেন মাত্র ১০ রান। আর ডেথ ওভারে দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে মুস্তাফিজ তো সাজঘরেই পাঠিয়েছিলেন ডি ভিলিয়ার্স ও ওয়াটসনকে। ৪ ওভার বল করে ২৬ রানের বিনিময়ে মুস্তাফিজ নিয়েছেন দুটি উইকেট। বেঙ্গালুরুর ব্যাটিংস্বর্গে কোহলি, ডি ভিলিয়ার্স, ওয়াটসনদের মতো মারমুখী ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে এমন নজরকাড়া পারফরমেন্সের পর মুস্তফিজের প্রশংসা না করেও বা উপায় কী?
ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর শিরোনাম ছিল : ‘আলো ছড়ালেন মুস্তাফিজ, কিন্তু সানরাইজার্স হারল বড় ব্যবধানে।’ সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার যে মুস্তাফিজকে ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারেননি, সেটা বিশ্লেষণ করে একটি আলাদা প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে ক্রিকইনফোতে। একেবারে শেষ দুই ওভারের জন্য জমিয়ে না রেখে মুস্তাফিজকে আরো আগেই বল করার সুযোগ দেওয়া যেত বলে মন্তব্য করা হয়েছে সেই প্রতিবেদনে। তাহলে হয়তো কোহলি-ডি ভিলিয়ার্সের ১৫৭ রানের বিধ্বংসী জুটিটা আরো আগেই ভেঙে যেতে পারত।
কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকাতেও বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে মুস্তাফিজকে নিয়ে। শিরোনাম ছিল : ‘আইপিএল অভিষেকেই জোড়া উইকেট মুস্তাফিজের’। টাইমস অব ইন্ডিয়ায় ম্যাচের সেরা পাঁচ পারফরম্যান্স তুলে ধরতে গিয়ে রাখা হয়েছে মুস্তাফিজের দুর্দান্ত বোলিং ফিগারটাও। হিন্দুস্থান টাইমসেও বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে মুস্তাফিজকে নিয়ে। কীভাবে সাতক্ষীরার একটি গ্রাম থেকে উঠে এসে ক্রিকেট বিশ্বের নজর কাড়ছেন, সেটাই পাঠকদের সামনে তুলে এনেছে হিন্দুস্তান টাইমস।
ধারাভাষ্যকক্ষে থাকলে নিশ্চিতভাবেই মুস্তাফিজের প্রশংসায় মেতে উঠতেন হার্শা ভোগলে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড হুট করে তাঁকে বাদ দিয়ে দিলেও টুইটারে মুস্তাফিজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এই ধারাভাষ্যকার। লিখেছেন, ‘মনে হলো সানরাইজার্স হায়দরাবাদে মুস্তাফিজ ছাড়া আর তেমন কিছু নেই। মনে হচ্ছে আইপিএলের অন্যতম সেরা বোলার হবে এই মুস্তাফিজ।’