গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতা : হামলা ও অনাহারে নিহত ৬২ হাজার ফিলিস্তিনি

প্রায় দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলি হামলা, অনাহার ও বোমাবর্ষণে এখন পর্যন্ত ৬২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অবরুদ্ধ এ ভূখণ্ডে নিরাপদ আশ্রয়ের কোনো জায়গা নেই, প্রতিদিন মানুষ খাবারের সন্ধানে গিয়ে জীবন হারাচ্ছেন। খবর আল জাজিরার।
গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় নগরী গাজা সিটিকে দখলের পরিকল্পনায় ইসরায়েল সেখানে হামলা আরও তীব্র করেছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) ভোর থেকে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৪ জন ত্রাণসন্ধানী ছিলেন। আল-সাবরা এলাকায় এক হামলায় সাংবাদিক ইসলাম আল-কুমি নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজযুম জানান, ইসরায়েল পূর্ব গাজা সিটিতে দিনরাত হামলা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, “ইসরায়েলি হামলা গাজার ভূগোল ও জনসংখ্যাকে পাল্টে দিচ্ছে। ভারী কামান, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন ব্যবহার করে আবাসিক এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হচ্ছে।”
রোববার (১৭ আগস্ট) একদিনেই গাজায় প্রায় ৬০ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল এখন অবশিষ্ট অল্প কিছু স্বাস্থ্যকেন্দ্রকেও লক্ষ্যবস্তু করছে। ফলে বাস্তুচ্যুত মানুষেরা ভাঙা বাড়ি, অস্থায়ী আশ্রয় বা তাঁবুতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বিলাল আবু সিত্তা বলেন, “দক্ষিণে যেতে আমার ৯০০ ডলার প্রয়োজন। আমার কাছে এক ডলারও নেই। আমি কীভাবে যাব?”
অন্যদিকে, নোমান হামাদ জানান, “আমরা ইসরায়েলের কাছ থেকে কিছু চাই না। আমরা শুধু আমাদের বাড়িতে ফিরতে চাই।”

এদিকে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নিয়েছে হামাস। খসড়া চুক্তি অনুযায়ী, ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে গাজায় বন্দি থাকা ইসরায়েলিদের অর্ধেক এবং ইসরায়েলি কারাগারে থাকা কিছু ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
তবে গাজার জনগণ আগে বহুবার যুদ্ধবিরতির আশায় প্রতারিত হয়েছেন। জানুয়ারির ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধবিরতি মার্চেই ভেঙে গেলে যুদ্ধ আরও ভয়াবহ রূপ নেয়।