জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন তাকাইচি

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতৃত্ব অর্জনের পর রক্ষণশীল ঘরানার সানাই তাকাইচি দেশটিতে নতুন যুগ শুরুর বার্তা দিয়েছেন। ৬৪ বছর বয়সী এই নেত্রীকে এখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে পার্লামেন্টের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের। এ মাসের শেষ দিকে জাপানের পার্লামেন্ট তাদের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাকাইচিকে নির্বাচিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। খবর এএফপির।
গত কয়েক দশক ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে এলডিপি জাপানের ক্ষমতাসীন দল হিসেবে শাসনকাজ চালিয়ে গেলেও সাম্প্রতিক সময়ে সেনসেইতো’র মতো অভিবাসনবিরোধী দলগুলোর প্রতি সমর্থন বাড়তে থাকায় তাদের প্রতি জনসমর্থন কমে আসছে।
সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারকে নিজের আদর্শ হিসেবে মেনে চলা সানাই তাকাইচি এলডিপির নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর তার ক্ষয়িষ্ণু দলটির ভাগ্য ফেরাতে সামনে ‘পাহাড়সম কাজ’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন। এলডিপির নেতৃত্ব পাওয়ার লড়াইয়ে নিজের কট্টরপন্থি অবস্থান থেকে সংযত হয়ে কথা বলা তাকাইচি গত পাঁচ বছরের মধ্যে দেশটির পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছেন।
নেতা নির্বাচিত হওয়ার দৌড়ে তার চাইতে ২০ বছর কম বয়সী ও অপেক্ষাকৃত উদারপন্থি শিনজিরো কোইজুমিকে ভোটে হারানোর পর এলডিপির সদর দপ্তরে তাকাইচি বলেন, ‘আপনাদের অনেককে সঙ্গে নিয়ে আমরা এলডিপির জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করতে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে খুশি হওয়ার বদলে আমি অনুভব করছি–সামনে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। তবে আমি নিশ্চিত সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যে একরাশ কাজ রয়েছে, সেগুলো আমরা সমাধান করতে পারব।’
সহকর্মীদের করতালির মধ্যে তাকাইচি আরও বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই সব প্রজন্মকে একত্রিত করতে হবে। পাশাপাশি এলডিপির পুনর্গঠনে একযোগে কাজ করতে হবে। প্রত্যেককে ঘোড়ার মতো পরিশ্রম করতে হবে।’

নেতৃত্ব নির্বাচনের এই প্রক্রিয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী কোইজুমির ছেলে শিনজিরো কোইজুমি ছিলেন সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিত্ব। হেরে না গেলে তিনিই হতেন জাপানের সবচেয়ে কম বয়সের প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর তাকাইচিকে বেশকিছু জটিল ইস্যুর মুখোমুখি হতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে দেশটির বুড়িয়ে যাওয়া জনসংখ্যা, ভূ-রাজনৈতিক উত্থান-পতন, স্থবির অর্থনীতি ও অভিবাসন বিষয়ে অসহিষ্ণুতার মতো বিষয়গুলো।
তবে প্রথমে তাকাইচিকে নিশ্চিত করতে হবে ১৯৫৫ সাল থেকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা এলডিপির জন্য আবারও ভোটারদের সমর্থন আদায় করা।
এ বিষয়ে ‘সংকটে’ থাকা দলের বিষয়ে তাকাইচি বলেন, ‘এলডিপিকে অবশ্যই বিশ্বাস অর্জন করতে হবে এবং নতুন করে কাজ শুরু করতে দলকে ঢেলে সাজাতে হবে।’