সাক্ষাৎকার
গানের অ্যালবাম অনেক মিস করি : কোনাল

‘একক কিংবা দ্বৈত গান প্রকাশ হলেও ভালো লাগে। তবে গানের অ্যালবাম অনেক মিস করি।’ সাক্ষাৎকার দেওয়ার একপর্যায়ে কথাগুলো বলছিলেন দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সোমনুর মনির কোনাল। সম্প্রতি ‘ঘুম জড়ানো’শিরোনামে তাঁরএকটি গানের ভিডিও সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে। দ্বৈতকণ্ঠের গানটিতে বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন কোনাল। গানটির ভিডিওটি ও অন্যান্য প্রসঙ্গে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন কোনাল। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নাইস নূর।
এনটিভি অনলাইন : ‘ঘুম জড়ানো’ গানটিতে বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে কণ্ঠ দেওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
সোমনুর মনির কোনাল : বাপ্পা দাদার সঙ্গে সম্পর্ক অনেক ভালো। এ কারণে তাঁর সঙ্গে গান করা যেমন সহজ ঠিক, তেমনি কঠিনও। দাদা সামনে থাকলে আমি কন্ঠ দিতে পারি না।দাদা এটা বুঝতে পারেন। আমি খেয়াল করেছি আমার রেকর্ডিংয়ের সময় দাদা স্টুডিও রুম থেকে চলে যান।দাদা থাকলে আমি কাঁপতে থাকি। গান গাইতে পারি না।
তবে দাদা সামনে থাকলে অনেক কিছু শিখিয়ে দেন। বলবে, ‘এই জায়গায় এভাবে গাইবি। এই কথা স্পষ্ট করে বল।’
দাদার সঙ্গে কাজ করলে আদর স্নেহ, সম্মান অনেক পাই। ‘ঘুম জড়ানো’ গানটার সুর করেছেন নাজির ভাই। তিনি নব্বই দশকের গানের সুর করতেন। অনেক সুন্দর সুন্দর গান করতেন তিনি। সেই নাজির ভাই আবারও চমৎকার কিছু গানের সুর করছেন। কয়েকদিন আগে কনা আপুর গাওয়া ‘আমার ইচ্ছেগুলো’ শিরোনামে গানটির সুর করেছিলেন তিনি। খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল গানটি।
এনটিভি অনলাইন : ‘ঘুম জড়ানো’ গানটিতে থেকে অনেক ভালো সাড়া পাচ্ছেন। কেমন লাগছে আপনার?
সোমনুর মনির কোনাল : আমাকে অনেকেই বলেছেন, ‘আমি শান্তি পাচ্ছি গানটি শুনে।’ এই ধরণের গান আমি নিজে শুনতে পছন্দ করি এবং গাইতেও অনেক বেশি ভালো লাগে আমার। এই গানটি আমি টিভি লাইভে গাইতে পারি। এছাড়া বিকেল বেলার কোন অনুষ্ঠানে কিংবা বাসাতেও অবসরে গানটি গাওয়া যেতে পারে। গানের সুর ও কথা এ রকম সময়ের সঙ্গে খুব মানানসই।
এনটিভি অনলাইন : গানটির ভিডিওতে বাপ্পা মজুমদারকে দেখা যায়নি। এর কারণ কী?
সোমনুর মনির কোনাল : মিউজিক ভিডিওটি করতে আমার তেমন কষ্ট করতে হয়নি। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভি করেছে ভিডিওটি।ভিডিওতে আমার দৃশ্যধারণ করতেও খুব কম সময় লেগেছে। তবে ভিডিওটিতে বাপ্পা দাদাকে অনেক মিস করেছি। আমি যেটা শুনেছি ওই সময় দাদা দেশের বাইরে ছিলেন। ব্যস্ত ছিলেন তিনি, এ কারণে ভিডিওয়ের শুটিংয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। ভিডিওতে তাসনুভা তিশা ও আযহার সাইনির রসায়ন চমৎকার লেগেছে। তিশার সাবলীল অভিনয় আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। এর আগে আমার ‘বন্ধু’ গানটিতে তিশা মডেল হয়েছিলেন।
এনটিভি অনলাইন : আপনি তো সব ধাঁচের গান গেয়ে থাকেন। কনসার্ট ও স্টেজে পারফর্ম করার সময় কী ধরনের গানের অনুরোধ বেশি পান?
সোমনুর মনির কোনাল : স্টেজে আমরা পারফর্ম করলে দর্শক-শ্রোতারা নাচ এবং অনেক আনন্দ করতে পারবে এমন গান শুনতে চায়।আগে যেমন আমার কনসার্টে অনেক কাভার গান করে দর্শকে নাচাতে হতো। আমার এখন সেটা করতে হয় না। এখন স্টেজে আমার ফিল্মের গাওয়া কিছু গান গাইলে দর্শকের সাড়া অনেক পাই।
এনটিভি অনলাইন : অনেকদিন ধরে একক গান ও ভিডিও প্রকাশ করছেন। নতুন গানের অ্যালবাম করার পরিকল্পনা আছে?
সোমনুর মনির কোনাল : একক গান করা ভালো কিন্তু আমি গানের অ্যালবাম অনেক মিস করি। আমার কাছে মনে হয়, একটা অ্যালবাম হাতে নিব, সেটা উল্টে পাল্টে দেখব। লিরিকগুলো পড়ব। কে কে কাজ করেছে সেটা দেখব। এটা দেখতেই আগে ভালো লাগত। আসলে ইচ্ছে তো হয় অ্যালবাম করতে কিন্তু এখন গানের অডিও ও ভিডিও প্রতিষ্ঠানগুলো গানের অ্যালবাম করছে না। শিল্পীরাও করছেন না। এখন একটা অ্যালবামে পুরো মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। অনেক গান থাকলে কাজ করতে সময় লাগে বেশি। মনোযোগ দিতে হয় বেশি। তবে সিঙ্গেল গান হলে মুভ করা যায় ভালো। এখন সিঙ্গেল গানের সাড়াও পাওয়া যায় বেশি। এনটিভি অনলাইন : আমাদের অডিও ইন্ড্রাস্ট্রিতে এখন কাজ করতে গিয়ে কোন সমস্যা চোখে পরে কি?
সোমনুর মনির কোনাল : সমস্যা তেমন চোখে পড়ে না। এটা শুধু সংগীতের ব্যাপার না। এখন দেখছি যে কোন সেক্টরে একে অপরের কাজের সম্পর্কগুলো মেকি মেকি। যে সামনে গিয়ে হাসে সে পেছনে গিয়ে একটা গালিও দেয়। এটা শুধু আমাদের ইন্ড্রাস্ট্রিতে হয় না। আমার মনে হয় সব ইন্ড্রাস্ট্রিতে এটা হয়। এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত।
আমি এসবের সঙ্গে খুব একটা অভ্যস্ত নই, কারণ আমি দেশের বাইরে বড় হওয়া একটা মেয়ে। আমার সঙ্গে অনেক কিছু মানিয়ে নেওয়া খুব কঠিন হয়। একমাত্র সম্পর্কগুলো যখন আমি ভালো রাখতে চাই যখন সেই সম্পর্কগুলো ভালো থাকে না তখনই আমার মন খারাপ হয়। তবে এখন যতটুকু কাজ করছি সম্মান পাচ্ছি, সম্মান দিচ্ছি এবং মানুষের ভালোবাসাও পাচ্ছি।এটাই অনেক কিছু।
এনটিভি অনলাইন : সামনে কোন বিশেষ অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার কথা আছে?
সোমনুর মনির কোনাল : সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আগামীকাল একটি অনুষ্ঠানে আমি বাপ্পা দাদার সাথে নতুন দ্বৈত দেশের একটি গান গাইব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে আমরা পারফর্ম করব।
এনটিভি অনলাইন : মাননীন প্রধানমন্ত্রীর সামনে এর আগেও আপনার গান গাওয়ার সুযোগ হয়েছে। আপনার কেমন অনুভূতি হয়?
সোমনুর মনির কোনাল : আমি সৌভাগ্যবান আমার অনেকবার এই সুযোগ হয়েছে। সাধারণত প্রধানমন্ত্রীর সামনে আমরা দেশাত্মবোধক গান গেয়ে থাকি। আমরা তো অনেক জুনিয়র আর্টিস্ট। আমি মাইকে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম দিলে তিনি সালাম নেন। বাংলাদেশের প্রতিটি বাঙালির প্রতি তাঁর আলাদা যে যত্ন সেটা তাঁকে দেখলেই বোঝা যায়। অনেক সংস্কৃতমনা আমাদের প্রধানমন্ত্রী। এটা একজন নাগরিক হিসেবে আমাকে কাজ করার অনুপ্রেরণা দেয়।
এনটিভি অনলাইন : এবার অন্য প্রসঙ্গে জানতে চাই। সামনে পয়লা বৈশাখ। নতুন কোনো গান প্রকাশ পাবে কি?
সোমনুর মনির কোনাল : বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে নতুন কোনো গান রেকর্ড করিনি। এখন সময়ও নেই। দেখি কী হয়!
এনটিভি অনলাইন : শুনেছি অনেক নতুন গান রেকর্ডিং করা হয়েছে। প্রকাশ করবে কবে?
সোমনুর মনির কোনাল : শিগগির করব। গানগুলোর ভিডিও করারও পরিকল্পনা আছে।