‘আম্মাজান’ সিনেমা কেন এত জনপ্রিয়?

মায়ের প্রতি ভালোবাসার অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে ‘আম্মাজান’ সিনেমা। মায়ের প্রতি সন্তানের ভক্তি, শ্রদ্ধাবোধ, আত্মত্যাগ ও সম্পর্কের এক কালজয়ী সৃষ্টি হচ্ছে এই সিনেমা। ‘আম্মাজান’ বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। এটি ১৯৯৯ সালে মুক্তির পরপরই এক আলাদা উন্মাদনা সৃষ্টি করে পুরো বাংলাদেশে। সেই সময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়া সিনেমাটি এখনও ফেরে দর্শকের মুখে মুখে।
মুক্তির পর কিশোর, যুবক, প্রবীণ, বৃদ্ধ—সব বয়সের মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে সিনেমা হলে। দর্শকের মনে এতটাই সাড়া ফেলেছিল যে, মুক্তির প্রথম দিনেই আয় করে কোটি টাকা।
সিনেমার অন্যতম শক্তিশালী দিক এর গল্প। মা-ছেলের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে আবেগময় কাহিনি। বিশেষ করে ‘আমার আম্মাজান আমার লগে কথা কইছে’ সংলাপটি দর্শকদের হৃদয়ে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। এই সময়ে এসেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয় সংলাপটি।
সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন কিংবদন্তি অভিনেতা মান্না, যিনি সন্তানের চরিত্রে তার শক্তিশালী অভিনয়ের মাধ্যমে চরিত্রটিকে জীবন্ত করে তোলেন। ওই সময়ে মান্নার বাদশা চরিত্রের অভিনয় দেখে কাঁদেনি এমন লোক একটিও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাদশার মায়ের প্রতি সম্মান, ভালোবাসা দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে গিয়েছিল দর্শকরা। প্রতিটি সিনেমা হলে কান্নার রোল পড়ে গিয়েছিল তখন।
অপরদিকে মান্নার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন সাদাকালো যুগের সাড়া জাগানো অভিনেত্রী শবনম। এই সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করে সব বয়সী দর্শকদের কাছে আম্মাজান হিসেবে পরিচিতি ও ভালোবাসা অর্জন করেছেন এই অভিনেত্রী। এ ছাড়া এই চলচ্চিত্রটিতে অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পারফরম্যান্সও ছিল প্রশংসনীয়, যা সিনেমাটির জনপ্রিয়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সিনেমাটির প্রযোজক ও কাহিনিকার মনোয়ার হোসেন ডিপজল এবং চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন কাজী হায়াৎ। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন শবনম এবং তাঁর পুত্রের ভূমিকায় অভিনয় করেন মান্না। এ ছাড়া অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মৌসুমী, আমিন খান, ডিপজল, মিজু আহমেদ প্রমুখ। সে বছরের অন্যতম ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র এটি। ২৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে কাজী হায়াৎ শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার বিভাগে পুরস্কার লাভ করেন।