কীভাবে বুঝবেন বিষণ্ণতায় ভুগছেন?
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/01/20/photo-1484884983.jpg)
ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা সম্বন্ধে আমরা অনেক আলোচনা করেছি। তবুও বারবার পাঠকের জন্য বিষণ্ণতার আলোচনা এ জন্য করতে হয় যে খুব লঘুমাত্রার মানসিক সমস্যা হলেও বিষণ্ণতা আসলে একটি মারাত্মক সমস্যা। ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারকেই মূলত ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা বলা হয়। বিষণ্ণতা এমন এক ধরনের শব্দ, যার মৌলিক অর্থ দাঁড়ায় একজনের মনের ভাবসংক্রান্ত সমস্যা। বিষণ্ণতা একটি মনের রোগ। মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিষণ্ণতা খুব বড় প্রভাব ফেলে। অবশ্যই প্রভাবটি নেতিবাচক। চিন্তাভাবনা কেন্দ্রীভূত হয়ে ওঠে, অনেকেই ব্যক্তিজীবনে বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হলেও মনে করেন না যে তাঁদের কোনো সমস্যা রয়েছে। এটা খুব ভালো লক্ষণ। বহু গবেষণায় দেখা গেছে, বিষণ্ণতা এক প্রকার ব্যক্তিগত দুর্বলতা। সাময়িকভাবে এটি ব্যক্তিকে উদ্বিগ্ন করে তোলে, তবে প্রকৃতপক্ষে রোগীর সামষ্টিক মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয় না। তবে লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দিলেই বিষণ্ণতার চিকিৎসা করানো উচিত। কেননা, এটি যদি ক্রনিক হয়ে যায়, তবে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হলেও হতে পারে। আর এটি হলে ব্যক্তির বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগের সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক। কাজেই এ ক্ষেত্রে উচিত হবে ব্যক্তির ডাক্তারি সাহায্য গ্রহণ করা।
বিষণ্ণতার চিহ্ন ও লক্ষণ
এ কথা বলা অযৌক্তিক হবে না যে, বহু ক্ষেত্রে বিষণ্ণতার প্রকৃত অবস্থা বুঝে উঠতে চিকিৎসকদের কষ্ট হয়। কেননা, বিষণ্ণতায় আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো চিহ্ন বা লক্ষণ কিংবা উপসর্গ প্রায় ক্ষেত্রেই থাকে না। হয়তো রোগীর স্বাভাবিক আচরণে কিছুটা হেরফের হলো, তা থেকে এটি ধরে নেওয়া সহজ নয় যে রোগীর কেবল বিষণ্ণতা হয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগীর ম্যানিয়া বা ফোবিয়া আচরণের সঙ্গেও বিষণ্ণ আচরণের মিল থাকতে পারে। তবে চিকিৎসকরা বিষণ্ণতা আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কাজ করে মোটামুটি কয়েকটি চিহ্ন ও উপসর্গকে নির্দিষ্ট করতে পেরেছেন, যাতে করে বোঝা যেতে পারে ব্যক্তির বিষণ্ণতার সমস্যা আছে। এই নির্দিষ্ট চিহ্ন ও উপসর্গগুলো হলো :
* স্বাভাবিক আনন্দমুখর কাজকর্মের প্রতি অনীহা, যেমন : যৌনতা ইত্যাদি।
* ক্ষুধা ও ওজন-সংক্রান্ত পরিবর্তন। ওজন বৃদ্ধি অথবা হ্রাস কিংবা ক্ষুধা বৃদ্ধি অথবা হ্রাস পাওয়া ইত্যাদি।
* ঘুমের ক্রমাগত সমস্যা, যেমন : অনিদ্রা, সকালের দিকে ঘুম ভেঙে যাওয়া অথবা অতিরিক্ত ঘুম।
* অপরাধবোধে ভোগা, নিজেকে মূল্যহীন ভাবা অথবা অসহায়ত্ব বোধ করা ইত্যাদি।
* আশাহত অনুভূতি।
* কোনো সিদ্ধান্ত নিতে বারবার অসমর্থ হওয়া এবং একই সঙ্গে চিন্তাশক্তির অধঃপতন, মনোযোগের সমস্যা ইত্যাদি।
* মৃত্যু অথবা আত্মহত্যার চিন্তা করা, এমনকি ক্রনিক পর্যায়ে আত্মহত্যার ঝুঁকি নেওয়া।
* ক্রমাগত শারীরিক যেকোনো ব্যথা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি।
যাঁরা ওপরের যেকোনো পাঁচটি উপসর্গে একাধারে দুই সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে ভুগছেন, তাদের উচিত হবে শিগগিরই মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া।