বিষণ্ণতার চিকিৎসা কী?

বিষণ্ণতার চিকিৎসা সাধারণত দুভাবে করা যায়। সেগুলো হলো মেডিকেশন ও সাইকোথেরাপি। সাধারণত মধ্যম ও জটিল ধরনের বিষণ্ণতায় দুটো একসঙ্গে করা হয়।
এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৭৫০তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহিদ। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : বিষণ্ণতায় আক্রান্ত ব্যক্তি আমাদের কাছে গেলে প্রাথমিকভাবে কী করেন?
উত্তর : আমি যেহেতু ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, তাই সাইকোথেরাপির অংশটা দেখি। এখানে প্রথমে দেখা হয়, তার জটিলতার মাত্রাটা কতটুকু? তিনটি পর্যায় থাকে—মাইল্ড (কম), মডারেট (মধ্যম), সিভিয়ার (জটিল)। অতিরিক্ত সিভিয়ার ও মডারেট মাত্রাতে মেডিকেশন প্রয়োজন। বিষণ্ণতার সবচেয়ে ফলপ্রসূ চিকিৎসা হলো মেডিকেশন ও সাইকোথেরাপি।
সাইকোথেরাপির অনেক ধরন রয়েছে। এর মধ্যে কগনেটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি বেশি কার্যকর। সে ক্ষেত্রে আমরা প্রথমে দেখি রোগী কোন ধরনের বিষণ্ণতায় রয়েছেন। তিনি মেডিকেশন নিচ্ছেন কি না। না নিলে আমরা সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে রেফার করি। পাশাপাশি সাইকোথেরাপি চলতে থাকে। মূলত বিষণ্ণতায় নেগেটিভ অটোমেটিক থট (এমনি এমনি নেতিবাচক চিন্তা) চলে আসে। সে চায় না তবে নেতিবাচক চিন্তাগুলো চলে আসে। এর কারণে তার অনুভূতিগুলো সব সময় নেতিবাচক থাকে।
প্রশ্ন : কী কারণে হচ্ছে সেটি কি বের করার চেষ্টা করেন?
উত্তর : কোন কারণটি তাকে বিষণ্ণ করেছে, সেটি বের করতে সহায়তা করি। তারপর তার নেতিবাচক চিন্তা, যেগুলো তাকে বিষণ্ণ করে দিচ্ছে সেগুলোকে বের করি। সেগুলোকে আমরা ঠিক করার চেষ্টা করি। চিন্তায় যখন পরিবর্তন আসে, আবেগেও তখন পরিবর্তন আসে, কাজেও পরিবর্তন আসে। এভাবে কগনেটিভ বিহেভিয়ার থেরাপির মধ্য দিয়ে রোগীকে আমরা ঠিক করতে চাই।
প্রশ্ন : চিকিৎসা কত সেশনের মধ্যে হবে সেটি নির্ভর করে কিসের ওপর?
উত্তর : একটি হলো রোগের সিভিয়ারিটি (জটিলতা) অনুযায়ী। আরেকটি হলো ব্যক্তি কতটা নিতে পারবে, তার ওপর। সবাই কিন্তু একইভাবে নিতে পারে না। যে খুব দ্রুত নিতে পারছেন, বিষয়গুলো বুঝতে পারছেন, তার হয়তো খুব তাড়াতাড়ি শেষ করতে পারব। ব্যক্তির ওপর নির্ভর করছে। আমরা ব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবারকেও যোগ করি, যদি প্রয়োজন হয়। সাধারণত ১২ থেকে ১৫টি সেশন লাগে।