বিবাহিত মেয়েরাই কি বেশি বিষণ্ণতায় ভোগেন?

পুরুষের চেয়ে নারীরাই বেশি ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতায় ভোগেন—এ কথা প্রায় সবাই স্বীকার করবেন। তাই কোনো অবিবাহিত মেয়ে বিষণ্ণতায় ভুগলে তাঁকে তড়িঘড়ি করে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। যদি বিয়ে-সংক্রান্ত বিষয়ের কারণে কোনো মেয়ে বিষণ্ণতায় ভোগেন, সে ক্ষেত্রে হয়তো সমস্যা কিছুটা দূর হয়। আর বাকিদের ক্ষেত্রে সমস্যা থেকেই যায়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, একটি সুস্থ সাধারণ মেয়ে বিয়ের পর বিষণ্ণতায় বেশি ভোগেন।
বিয়ের পর একটি ছেলে যতটুকু সুখী হন, একটি মেয়ে কিন্তু ততটুকু সুখী হন না; বরং বিবাহিত একটি মেয়ের মনে নতুন করে বিভিন্ন আশঙ্কা জড়ো হতে থাকে। এটি তাঁকে অবসাদগ্রস্ত, বিমর্ষ ও অসুখী করে তোলে। বিবাহিত মেয়েরা নিদ্রাহীনতা, ইচ্ছার অপূর্ণতা ও অসহায়ত্বের প্রাচীরে বন্দি হয়ে মানসিক অসুস্থতার মধ্যে সময় কাটাতে থাকেন। অন্যদিকে একটি অবিবাহিত মেয়ে তুলনামূলক ভালো মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়ে জীবনযাপন করে থাকেন। একজন অবিবাহিত মেয়ে একজন অবিবাহিত ছেলে ও বিবাহিত মেয়ের চেয়ে বেশি সুখী থাকেন।
অন্যদিকে ডিভোর্সের পর একজন পুরুষ যতটুকু হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, একজন নারী তার চেয়ে কম হতাশাগ্রস্ত থাকেন। বিষয়টি বিশ্বাস না হলেও সত্যি। লাইফ ইভেন্টস নামে জীবন বিশ্লেষণধর্মী একটি বই এ তথ্য প্রকাশ করেছে। ডির্ভোসের পর একজন পুরুষ বুঝতে পারেন, নারী তাঁর জীবনে কতটুকু সাহায্যকারীর ভূমিকায় ছিল।
অবিবাহিত মেয়ের মধ্যে ডিপ্রেশনের প্রবণতা কম থাকার মূল কারণ হচ্ছে বিয়ের আগে বাবা-মা, ভাইবোন, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মিলেমিশে সৌহার্দ্য বজায় থাকে। বিয়ের পর যা আর কখনোই পাওয়া সম্ভব নয়। এই চিন্তাই একটি মেয়েকে বিমর্ষ করে তোলে। মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে যতই সুখে থাকুক, বাপের বাড়িতে বেড়ানো তাঁর কাছে বেশি সুখের, বেশি আনন্দের। তাই তো চল্লিশোর্ধ্ব নারীও যখন বাপের বাড়ি রওনা হন, তখন তাঁর মুখ হাসি হাসি থাকে। অথচ অনেকেই ভাবেন, বিয়ের পর মেয়েরা বেশি সুখী থাকেন। আসলে কথাটি যে ঠিক নয়, তা অনেক মেয়েই নিজেকে দিয়ে উপলব্ধি করতে পারবে।
তথ্যসূত্র : বিদেশি বই
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।