তীব্র তাপপ্রবাহে গর্ভবতী নারীদের যত্নে করণীয়

ঢাকাসহ দেশের আট জেলায় তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল শনিবার (১০ মে) দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশে আরও কয়েকদিন এ ধরনের উচ্চ তাপমাত্রা স্থায়ী হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
প্রচণ্ড গরমে প্রয়োজন হয় বাড়তি সর্তকতার। বিশেষ করে, তীব্র তাপপ্রবাহ বা অত্যাধিক গরমে গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদানকারী নারীদের একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এ সময়ে গর্ভবতী নারীদের অবস্থা আরও কঠিন হয়ে উঠে। তাপপ্রবাহে সুস্থ থাকার জন্য গর্ভবতীদের কী করতে হবে এবং কী করা যাবে না, এসব বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এমসিএইচটিআই) পরিচালক ডা. ছেহেলী নার্গিস।
এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ডা. ছেহেলী নার্গিস বলেন, তীব্র গরমে সুস্থ থাকার জন্য গর্ভবতী নারীদের অনেকগুলো বিষয়ে খেয়াল রাখতে হয়। তার মধ্যে রয়েছে—
পানির ঘাটতি পূরণ
ডা. ছেহেলী নার্গিস বলেন, গরমে প্রচুর ঘাম হওয়ায় পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এজন্য সারা দিন পর্যাপ্ত পানি পান জরুরি। এ ছাড়া প্রচুর ফল ও ফলের রস পান করতে হবে। ন্যূনতম ১৫ গ্লাস পানি খাওয়া জরুরি। এ সময় মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, ঠোঁট-মুখ শুকিয়ে যাওয়া—এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এ ছাড়া তরল খাবার বা পান্তা ভাত হালকা লবণ দিয়ে খাওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।
পোশাক
ডা. ছেহেলী নার্গিস বলেন, গরমে পোশাক নির্বাচনে সর্তক থাকা জরুরি। আরামদায়ক, হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরা প্রয়োজন। সুতি ও শরীরে বাতাস চলাচলে সহায়তা করে, এমন পোশাক পরতে হবে। সাদা বা প্যাস্টেল শেডের (হালকা রং) পোশাক উপযুক্ত।
সূর্যালোক
অন্তঃসত্ত্বা নারীর সরাসরি সূর্যালোকে বেশি সময় না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. ছেহেলী নার্গিস। তিনি বলেন, বিশেষ করে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঘরের বাহিরে যাওয়া উচিত নয়। মোটকথা, রোদের সরাসরি সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে।
খাবার
অল্প করে একটু পরপর খেলে উপকার বেশি, কারণ এতে হবু মায়ের পরিপাক প্রক্রিয়ার ওপর বেশি চাপ পড়ে না। এতে শরীরে অধিক তাপও উৎপাদিত হয় না। এ সময় ক্যালসিয়াম, আয়রন, আমিষ ও আয়োডিনযুক্ত খাবার প্রয়োজন। এসব পাওয়া যাবে ফলমূল, শাকসবজি, ডাল, ডিম, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদিতে। কাঁচা, অর্ধসেদ্ধ অথবা বাহিরের অস্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. ছেহেলী। কারণ, এ ধরনের খাবারে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও পরজীবী জীবাণু থাকতে পারে। তখন ডাইরিয়াসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
বিশ্রাম
ঘুম ও বিশ্রাম গর্ভবতী মায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কোনো ধরনের ভারী কাজ করানো যাবে না। ভারী কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। তাই রুমটি ঠান্ডা রাখতে হবে। এসি না থাকলে ফ্যানের নিচে একটি পাত্রে ঠান্ডা পানি রাখলে রুম শীতল হবে এবং মায়ের জন্য আরামদায়ক হবে।
শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর নিয়ম
স্তন্যদানকারী মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ পান করানোর আগে অবশ্যই এক গ্লাস ঠান্ডা পানি খেয়ে নিতে পারেন। এ ছাড়া শিশুদের বাহিরের খাবার দেওয়া যাবে না।