‘ডিভোর্সকে সমাজ সহজভাবে নিতে চায় না’

সাধারণত সম্পর্ক অসুস্থ হয়ে পড়লে দম্পতি অনেক সময় ডিভোর্স বা তালাকের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিষয়টি তাদের ব্যক্তিগত হলেও সমাজ অনেক সময় একে সহজভাবে নিতে চায় না। এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮২৬তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. এস এম আতিকুর রহমান। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : সম্পর্কের অসুস্থ ধারাটা কীভাবে প্রকাশ পায়?
উত্তর : যখন একজন দম্পতি এবিউসিভ রিলেশন বা অসুস্থ সম্পর্কের মধ্যে থাকে, তাদের মধ্যে একজন প্রভাব বিস্তার করে। আরেকজন যখন তার প্রভাবে চলে, তার জীবনটা কিন্তু ছোট হয়ে যায়। তার বন্ধুমহল থেকে সে দূরে সরে যায়। সে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে না। সেটা হয়তো স্বাভাবিকভাবে আমাদের চোখে পড়ে না। আবার আমাদের দেশে যদি কাউকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘আপনি কেমন আছেন?’ সে কিন্তু খারাপ থাকলেও বলে, ‘আমি ভালো আছি।’ আরো একটি বিষয় থাকে যে আমাদের বলার অভ্যাসটাই এ রকম।
যদি সম্পর্কের অবস্থার কথা জিজ্ঞেস করে, তাহলে বলে ভালো। হয়তো সে আগের রাতেই মার খেয়েছে স্বামীর কাছে বা স্বামী হয়তো অপমানিত বোধ করেছে স্ত্রীর আচরণে। তারপরও কিন্তু সে বলবে যে ভালো আছি। এটা দেখে বোঝার উপায় নেই। দেখা যাচ্ছে, স্বামী-স্ত্রী দুজনই কষ্ট বা জটিলতার মধ্যে রয়েছে। তবে বাইরে সেটি প্রকাশ করছে না। শুধু আমরা ডিভোর্সের ক্ষেত্রে দেখি, এদের ডিভোর্স হয়ে গেল। সে ক্ষেত্রে সমাজের একটি দৃষ্টিভঙ্গি থাকে। ডিভোর্সকে কিন্তু সহজভাবে নিতে চায় না। সমাজ তখন বিভিন্ন রকম কথা বলে। এ ভয়েও কিন্তু অনেকে ডিভোর্সে যায় না।
এই কিছুদিন আগে ফেসবুকে ঝড় উঠে গেল তাহসান-মিথিলার ডিভোর্সের বিষয়টি নিয়ে। তাঁদের জন্য বিষয়টি বেদনাদায়ক ছিল, নাকি ভালো ছিল, সেটি তো তাঁদের বিষয় ছিল। তাঁরা তাঁদের মতো সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন। সেই চেষ্টাটাও তাঁদের অনেক দিন ধরেই ছিল। তবে আমরা কী করছি? চাপিয়ে দিতে চাচ্ছি যে তাঁদের সম্পর্কে থাকতে হবে। আমার মনে হয়, এ ধরনের বিষয়গুলো সেই দম্পতির ওপরেই ছেড়ে দেওয়াটা ভালো।