উদ্বেগ কি বেশি হয়?

দুশ্চিন্তা একেবারে চলে যাবে না, ধীরে ধীরে কমবে। ছবি : সংগৃহীত
উদ্বেগ হলো এক ধরনের মানসিক অবস্থা। বিভিন্ন কারণে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ কাজ করে। তবে অনেক সময় এটি বেশ সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকের ক্ষেত্রে অস্থিরতা, শ্বাসকষ্ট, হাত-পা কাঁপা, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। বেশি অসুবিধা হলে কখনো কখনো মনোচিকিৎসকের পরামর্শও নেওয়ার প্রয়োজন হয়।
উদ্বেগ কী?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সালমা পারভিন জানান, উদ্বেগ হলো এক ধরনের মানসিক অবস্থা। ভীষণ দুশ্চিন্তা, নেতিবাচক চিন্তা থেকে এ রকম হয়। এতে আচরণ ও শরীরের মধ্যে পরিবর্তন আসে।
কেন উদ্বেগ হয়
বিভিন্ন কারণে উদ্বেগ হতে পারে জানিয়ে সালমা পারভীন বলেন,
- হুমকি বা ঝুঁকি বোধ হচ্ছে এমন অবস্থায় উদ্বেগ হতে পারে। কোনো পরিস্থিতি ভালোভাবে মোকাবিলা করতে না পারার চিন্তা থেকে উদ্বেগ হতে পারে।
- ব্যক্তি কীভাবে চিন্তা করে এর ওপর উদ্বেগ হতে পারে। ব্যক্তির চিন্তার মধ্যে যদি ভবিষ্যৎ খুব বেশি প্রাধান্য পায়, তখনো উদ্বেগ হয়।
- অনেক সময় কোনো কিছু নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করলে এটি হতে পারে।
- আমাদের চিন্তার মধ্যে কিছু ত্রুটি থাকে। এটি থেকে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়। বেশির ভাগ সময় নেতিবাচক চিন্তা করলে এমন হতে পারে। অনেক সময় খুব সামান্য ঘটনাকে বিপজ্জনক মনে করে উদ্বেগ তৈরি হয়। যেমন : কেউ আসতে দেরি করলে হয়তো উদ্বেগ তৈরি হয়। মনে হয়, হয়তো সড়ক দুর্ঘটনা হলো। এগুলো আসলে ত্রুটিপূর্ণ চিন্তা।
লক্ষণ
- ঘুমের সমস্যা হওয়া
- বুক ধড়ফড় করা
- গলা শুকিয়ে যাওয়া
- হাত-পা কাঁপা
- মাথাব্যথা
- শ্বাসকষ্ট
- বুকে চাপ অনুভূত হওয়া
- নারীদের ক্ষেত্রে হট ফ্লাস, কোল্ড ফ্লাস
- অস্থিরতা
- মনোযোগের সমস্যা
- পেটের মধ্যে ঘুর ঘুর অনুভূতি ইত্যাদি।
উদ্বেগ সামলাবেন যেভাবে
কীভাবে উদ্বেগ সামলাবেন, এর পরামর্শ দিয়ে মনোবিশেষজ্ঞ সালমা পারভীন জানান—
- দুশ্চিন্তা একেবারে চলে যাবে না। এটা ধীরে ধীরে কমবে। ব্যবস্থাপনা করে ধীরে ধীরে দুশ্চিন্তা দূর করতে হবে।
- মনোযোগকে অন্যদিকে ঘোরাতে হবে। যেই জিনিসটি নিয়ে উদ্বেগ হচ্ছে, তা নিয়ে না ভেবে অন্য কোনো কিছুর প্রতি মনোযোগী হতে হবে।
- নেতিবাচক চিন্তাগুলো কীভাবে ইতিবাচক করা যাবে, সেই বিষয়ে ভাবতে হবে।
- শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে শ্বাস একবার নিয়ে, কিছুক্ষণ দম বন্ধ করে মুখ দিয়ে আবার শ্বাস ছাড়তে হবে। এভাবে কয়েকবার করা যেতে পারে।
- কাজের চাপের কারণে দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগ হলে ছোট ছোট কয়েকটি ভাগে কাজ ভাগ করে নিতে হবে।
- উদ্বেগ কমাতে আনন্দদায়ক বিভিন্ন কাজ করা যেতে পারে। গান শোনা, শপিং করা, বই পড়া, বেড়াতে যাওয়া ইত্যাদি করতে পারেন।
- খুব বেশি সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে। পাশাপাশি কাউন্সিলের কাছে গিয়ে কগনেটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি নেওয়া যেতে পারে।