ভর্তি হওয়ার পরদিনই হাসপাতাল থেকে রোগী নিখোঁজের অভিযোগ

রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর ফিরোজা খাতুন নামের একজন নারী রোগী নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রোগীর পরিবারের দাবি, হাসপাতালে দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষীরা যথাযথ ভূমিকা পালন না করায় এ ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে নিখোঁজ রোগীর স্বামী আবদুল হক শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
রোগী ফিরোজা খাতুনের ছেলে হাফেজ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মা দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। তার হার্টে সমস্যা আছে, আবার মানসিক সমস্যাও রয়েছে। আমরা নোয়াখালীতে কয়েকদিন চিকিৎসা করিয়েছি। একটু ভালো চিকিৎসার জন্যই গত শনিবার (১৭ আগস্ট) তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করি। পরদিন, অর্থাৎ গতকাল রোববার সকাল থেকে মাকে আর খুঁজে পাচ্ছি না।’
জহিরুল ইসলাম আরও অভিযোগ করে বলেন, মা (ফিরোজা খাতুন) নিখোঁজ হওয়ার পর হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা কিছুটা সহযোগিতা করলেও নিরাপত্তারক্ষীরা কোনো সহযোগিতা করেননি। এমনকি, তার ওয়ার্ডে কোনো সিকিউরিটি গার্ডও ছিল না।
এ বিষয়ে আনসার কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনা শোনার পরই আমাদের গ্রুপে জানিয়েছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এরপর রোগী ফিরোজা খাতুনের পরিবারের অনুরোধে সিসিটিভি ফুটেজ দেখার ব্যবস্থা করেছি। সেখানে দেখা যায়, ওই রোগী কাউকে কিছু না বলেই বের হয়ে যাচ্ছেন।’
কোনো রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে তার বাইরে যাওয়া ও নিরাপত্তার দায়িত্ব কার—এমন প্রশ্নের জবাবে আনসারের এই কমান্ডার বলেন, ‘রোগী বাইরে গেলে বা কোথাও গেলে তার খোঁজ নেওয়ার দায়িত্ব অবশ্যই আমাদের। তবে সেখানের দায়িত্বে একজন সিকিউরিটি গার্ড (নিরাপত্তারক্ষী) ছিলেন। তিনি কী করেছেন তা আমার জানা নেই।’
এ বিষয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সিকিউরিটি গার্ড সুপারভাইজার আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘আমি এমনটা শুনেছি। তবে ওই রোগীর নাকি জিন আছে, তাই তিনি এমন মাঝেমধ্যেই করেন।’ তখন ওয়ার্ডের সামনে কোনো গার্ড ডিউটিতে ছিলেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একজন ছিলেন। ওয়ার্ড থেকে বের হলে রোগীর তাকে জানিয়ে যাওয়ার কথা।’
রোগী ফিরোজা খাতুনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তারক্ষীদের দায়িত্বে কোনো অবহেলা হয়েছে কি না—জানতে চাইলে সুপারভাইজার আশরাফ উদ্দিন আরও বলেন, ‘এত রোগীর চাপ, আসলে একটু অবহেলা হয়েই যায় মনে হয়। তবে আমি যে গার্ড দায়িত্বে ছিলেন, তার সঙ্গে কথা বলে পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।’
বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যের জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক দেশের বাহিরে থাকায় ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামানের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌফিক ফয়সাল আজ সন্ধ্যায় এনটিভি অনলাইনকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। এ বিষয়ে কাজ করছে পুলিশ।