অফিসে নারীরা কেন বেশি শীত অনুভব করে

কর্মক্ষেত্রে নারীদের একটা সাধারণ সমস্যা বেশি শীত শীত লাগা। যখন অফিসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্রের নিচে পুরুষ সহকর্মীরা স্বাভাবিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে, তখন ওই একই তাপমাত্রায় বেশি শীত লাগে নারীদের। সমস্যাটি যে কেবল আমাদের দেশের নারীদের, তা নয়। সারা বিশ্বেই কর্মক্ষেত্রে এ সমস্যায় ভোগে মেয়েরা।
এ সমস্যার কারণ খুঁজতে নেদারল্যান্ডসের ম্যাসট্রিক্ট মেডিকেল সেন্টারের দুই গবেষক কিংমা ও ওউটার ভেন মার্কেন লিচটেনবেল্ট একটি গবেষণা চালান। এই গবেষণায় বেরিয়ে আসে এক অবাক করা তথ্য। বেশির ভাগ অফিসে জলবায়ু নিয়ন্ত্রক পদ্ধতি ৪০ বছরের পুরুষের বিপাকীয় হারের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়েছে। যাদের ওজন গড়পড়তা ১৫৫ পাউন্ড।
শুধু তাই নয় গবেষকরা আরো জানিয়েছেন তাপমাত্রার এই হারটি নির্ধারণ করা হয়েছে, ১৯৬০ সালের সাধারণ শ্রমিকদের ওপর ভিত্তি করে। তাপনিয়ন্ত্রক যন্ত্রের আদর্শ তাপমাত্রাটি সেই প্রাচীনকালে তৈরি করার পর আর হালনাগাদ করা হয়নি।
গবেষক বরিস কিংমা সিএনএনকে বলেন, ‘সাধারণত অফিসের তাপনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পুরুষের বিপাকীয় হারের ওপর ভিত্তি করে করা হয়।’
গবেষণা প্রতিবেদন প্রাকৃতিক জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক একটি জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষণার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে গবেষকরা বলেছেন, কর্মক্ষেত্রের তাপমাত্রা ‘শরীরের বিপাকীয় হারের’ ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। কারণ বর্তমানে কর্মক্ষেত্রের যথার্থ তাপমাত্রা কেবল নারীদের জন্যই প্রতিকূল নয়, বৃদ্ধ ও শিশুদেরও এতে অসুবিধা হয়। কারণ প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বৃদ্ধ ও শিশুদের বিপাকীয় হার ভিন্ন।
যুক্তরাষ্ট্রের মোট লোকবলের ৪৭ শতাংশই নারী। তাদের কর্মস্থলে শাল অথবা কম্বল মুড়ে বসে থাকতে দেখা যায়।
জৈবপদার্থবিদ কিংমা জানান, নারীরা পুরুষদের চাইতে আকারে ছোট হয় এবং তাঁদের দেহে পুরুষদের তুলনায় বেশি চর্বি থাকে। এ কারণে তাঁদের বিপাকীয় হারও থাকে পুরুষদের তুলনায় ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ কম।
১৬ জন নারীর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা দেখতে পান, কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা পুরুষদের তুলনায় ৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট বেশি।