শেষ মুহূর্তের গোলে বাংলাদেশের জয়

দর্শকরা নিশ্চুপ বসে ছিল। গ্যালারিতে পিনপতন নীরবতার কারণ আছে। দুই গোলে এগিয়ে থেকেও বাংলাদেশ কি না ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে। রেফারি অপেক্ষায় কখন শেষ বাঁশি বাজাবেন। তার আগে শেষ মুহূর্তে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা দেখল বাংলাদেশ শো। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়ের খেলা চলছিল। তখনই মাঝমাঠ থেকে আক্রমণ। ডান প্রান্ত থেকে বল পেয়ে ছোটেন উমহেলা মারমা। নেপালের ডিফেন্সচেরা পাস বাড়ান তৃষ্ণা রাণীর দিকে। গোল না হলে ম্যাচ ড্র, ফল বের করতে হলে গোলের বিকল্প নেই। এমন অবস্থায় ভুল করেননি তৃষ্ণা। বল পাঠান জালে।
রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বাংলাদেশ ছিনিয়ে নেয় জয়। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ রোববার (১৩ জুলাই) নেপালকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী দল। টানা দুই জয়ে মজবুত করেছে পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের জায়গা।
প্রথমার্ধের দাপট দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বজায় রাখে বাংলাদেশ। ধরে রাখে নিজেদের জোড়া গোলের লিড। ৫৫ মিনিটে হাতাহাতিতে জড়িয়ে যান দুদলের ফুটবলাররা। রেফারি লাল কার্ড দেখান বাংলাদেশের সাগরিকা ও নেপালের সিমরানকে। ১০ জনের দলে পরিণত হয় উভয় শিবির। এরপরই আক্রমণ চালায় বাংলাদেশ। তৃষ্ণা রাণীর লম্বা শট বারপোস্ট ঘেঁষে বের হয়। পাওয়া হয়নি গোল।
ম্যাচের ব্যবধান কমে ৭৬ মিনিটে। বাংলাদেশকে হতাশ করে গোল করে বসে নেপাল। গোল পেয়ে উজ্জীবিত দলটি একাধিক আক্রমণ শানায়। যার প্রেক্ষিতে ৮৬ মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরায় সফরকারী নেপাল। এরপর আর গোল পায়নি কোনো দল। ২-২ স্কোরলাইন হয়ে থাকে ম্যাচের ফল নির্ধারণী।
কিংস অ্যারেনায় প্রথমার্ধে অবশ্য দাপট ধরে রাখে স্বাগতিকরা। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
রেফারির বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। মুনকি আক্তারের পাস থেকে ডানপ্রান্ত থেকে সিনহা জাহান শিখা ভালো সুযোগ তৈরি করেন। সাগরিকা চেষ্টা করেছিলেন তৃতীয় মিনিটে। সেট পিস থেকে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল গোলের। যদিও প্রথম গোল পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৩ মিনিট পর্যন্ত।
১৩ মিনিটে সাগরিকা ছুটেছেন বল নিয়ে। নেপাল রক্ষণকে ঘোল খাইয়ে তিনি ঢুকে পড়েন প্রতিপক্ষের রক্ষণে। সাগরিকা বল ছাড়লে তা পান মুনকি আক্তার। গোলরক্ষক সুজাতা তামাংকে বোকা বানিয়ে বল পাঠাচ্ছিলেন জালে। নেপালের রক্ষণভাগের ফুটবলার গঙ্গা রোকাইয়া একদম গোললাইন থেকে রক্ষা করেন। ফিরতি বলে শিখা বল পাঠান জালে। এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
২৯ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে সুযোগ পেয়েছিল নেপাল। সমতা ফেরাতে হেডও দেন নেপালি ফুটবলার। তবে, বাংলাদেশি গোলরক্ষক স্বর্ণা রাণী তৈরি ছিলেন। বল লুফে নেন বিশ্বস্ত হাতে। মিনিট দুয়েক বাদে নেপাল আবার চেষ্টা করেছিল, এবারও বল ধরা পড়ে স্বর্ণার গ্লাভসে।
৩৬ মিনিট, মাঠমাঝ থেকে আক্রমণ তৈরি করে বাংলাদেশ। মুনকির বাড়ানো বলে বাঁ দিক থেকে আক্রমণ সাজান শান্তি মারডি। লম্বা ক্রস বাড়ান শিখার দিকে। দুবারের চেষ্টায় নেপাল গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি শিখা। তৃতীয়বারের চেষ্টায় বলকে তার চেনা ঠিকানা জালে পাঠান সাগরিকা। বাংলাদেশ পায় দুই গোলের লিড।
প্রথমার্ধের বাকি সময় গোল দিতে মরিয়া ছিল দুদলই। কখনও গোলরক্ষকের কল্যাণে, কখনও ফিনিশিংয়ের ভুলে গোল পাওয়া হয়নি কারও।