ভোরে ভিন্ন ম্যাচে মাঠে নামছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা

ফিফার সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক উইন্ডোতে আবারও শুরু হচ্ছে ফুটবল উন্মাদনা। দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল মানেই তো উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢালা! আর সেই উত্তেজনা দ্বিগুণ হয় যদি আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের মতো পরাশক্তি দলগুলো একসঙ্গে মাঠে নামে। বিশ্বের ফুটবলপ্রেমিদের ফুটবলীয় উৎসব রাঙাতে ভোরে ভিন্ন ভিন্ন ম্যাচে মাঠে নামছে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৫টায় ভেনেজুয়েলাকে আতিথ্য দিবে আর্জেন্টিনা। তার এক ঘণ্টা পরে অর্থাৎ সকাল সাড়ে ৬টায় ব্রাজিলের বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে চিলির মুখোমুখি হবে সেলেসাওরা।
লাতিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে সবার আগে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা। পরে ব্রাজিলও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে নিজেদের জায়গা পাকা করেছে। এরপরও দুই দলের জন্যই এই ম্যাচটি বিশেষ।
বিশ্বকাপের আগে দুই দলের জন্যই ঘরের মাঠে এটাই শেষ ম্যাচ। গুঞ্জন আছে, বিশ্বকাপ খেলেই বিদায় নিবেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি। সেই হিসাবে এটাই হতে যাচ্ছে ঘরের মাঠে মেসির শেষ ম্যাচ। কিংবদন্তিকে ঘরের মাঠে বিদায় জানাতে ম্যাচটি তাই আলবিসেলেস্তেদের জন্য বিশেষ এক উপলক্ষ।
আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম কিংবদন্তিকে বিদায় জানাতে এই ম্যাচটি জিততে চায় আলবিসেলেস্তেরা। এছাড়াও মেসিকে বিদায় জানাতে স্টেডিয়ামে থাকবে বিভিন্ন আয়োজন।
নিয়ম অনুযায়ী, দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে ছয়টি দল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে। আরও একটি দল সুযোগ পাবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপে জায়গায় করে নেওয়ার। লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আর বাকি আছে দুই ম্যাচ। এই ম্যাচ দিয়েই সমীকরণ মেলাতে হবে।
ফলে ভিন্ন এক সমীকরণ নিয়ে মাঠে নামবে ভেনেজুয়েলা। প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ তাদের সামনে। বর্তমানে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বের পয়েন্ট টেবিলে সপ্তম স্থানে রয়েছে তারা। ভেনেজুয়েলার চেয়ে এক পয়েন্ট কম নিয়ে অষ্টম স্থানে আছে বলিভিয়া। তাই বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন পূরণ করতে তাদেরও জয়ের কোনো বিকল্প নেই।
সেটা অবশ্য তাদের জন্য মোটেও সহজ হবে না। পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত সর্বমোট ২৮ বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। এর মধ্যে ২৩টি ম্যাচেই জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। বিপরীতে ভেনেজুয়েলার জয় দুটি ম্যাচে। ড্র হয়েছে তিনটি ম্যাচ।
অন্যদিকে, এই ম্যাচ দিয়ে বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে কার্লো আনচেলত্তির অধীনে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ব্রাজিলের দায়িত্ব নেওয়ার পরই আনচেলত্তি জানিয়েছিলেন, মারাকানা স্টেডিয়ামের ডাগআউটে বসার তর সইছে না তার। বিখ্যাত স্টেডিয়ামে তাই জয় দিয়েই শুরু করতে চান ইতালিয়ান এই মাস্টারমাইন্ড।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচের দল ঘোষণায় বড় চমক দিয়েছেন আনচেলত্তি। স্কোয়াডে রাখেননি নেইমার জুনিয়র, ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রদ্রিগোর মতো তারকাদের। ব্রাজিল তো বটেই বিশ্ব ফুটবলেরই বড় এই নামগুলোকে ছাড়াই চিলির বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ নিবে সেলেসাওরা।
পরিসংখ্যান বলছে, চিলির বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ২৬টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল। এর মধ্যে সেলেসাওদের জয় ২১টি ম্যাচে। বিপরীতে চিলির জয় মোটে দুই ম্যাচে। বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। ২০২৪ সালে সবশেষ ম্যাচে চিলির ঘরের মাঠে তাদের ২-১ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল।
অন্যদিকে, দুঃসময় পার করা ব্রাজিলের সুদিন ফেরাতে দায়িত্ব নিয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি। বিশ্বকাপের আগে দলের মধ্যে ছন্দ তৈরি করা বড় চ্যালেঞ্জ তার জন্য। দায়িত্ব নেওয়ার পরে ইতোমধ্যে দুটি ম্যাচে ব্রাজিলের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন তিনি। যেখানে একটি করে জয় ও ড্র রয়েছে সেলেসাওদের।