নেইমারকে পাল্টা জবাব দিলেন আনচেলত্তি

বিশ্বকাপের সময়টা যত ঘনিয়ে আসছে, নেইমার জুনিয়রের ব্রাজিল দলে ফেরার শঙ্কাটা ততটাই বাড়ছে। গত ২২ মাসে দলের সেরা তারকার ফেরা হয়নি ব্রাজিলের জার্সিতে। একসময় ইউরোপিয়ান ফুটবলে দাপিয়ে বেরানো নেইমারকে শৈশবের ক্লাবে ফিরিয়েছে তার চোট। দীর্ঘ অপেক্ষার পর একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ দুটি ম্যাচে দলে ফেরার। কিন্তু আশা জাগিয়েও আনচেলত্তি শেষ পর্যন্ত তাকে স্কোয়াডে রাখেননি।
স্কোয়াড ঘোষণার সময় আনচেলত্তি বলেছিলেন ছোটের কারণে নেইমারকে তিনি দলে রাখেননি। এরপর নেইমার এক ম্যাচের বিরতি দিয়ে পরের ম্যাচেই ফ্লুমিনেন্সের বিপক্ষে ৯০ মিনিট মাঠে থেকে জানিয়ে দেন, চোটের কারণে তিনি বাদ পড়েননি। তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে টেকনিক্যাল কারণে। এরপরই বিতর্ক তৈরি হয়।
কিন্তু এবার ঐতিহাসিক মারাকানতে প্রথমবার মাঠে নামার আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে মুখ খুললেন আনচেলত্তি। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের জন্য নেইমারকে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তটি ছিল টেকনিক্যাল সিদ্ধান্ত। চোট বা ফিটনেসজনিত কোনো সমস্যার কারণে তাকে বাদ দেওয়া হয়নি।
চিলির বিপক্ষে বৃহস্পতিবারের ম্যাচের আগে আনচেলত্তি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা ছিল একটি টেকনিক্যাল সিদ্ধান্ত, অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এমন সিদ্ধান্তের মানে নেইমারের ব্রাজিলের হয়ে মাঠে ফেরার অপেক্ষাটা আরও দীর্ঘ হলো। সেলেসারদের জার্সিতে তিনি সর্বশেষ খেলেছেন ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর। সম্প্রতি নেইমার জানিয়েছেন যে তিনি সুস্থ এবং কোনো ইনজুরিতে ভুগছেন না। সান্তোসে ফিরে ২০ ম্যাচে করেছেন ৬ গোল, করিয়েছেন ৩টি।
তবু আনচেলত্তি নেইমারকে দলে রাখেননি। যদিও তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, শারীরিক প্রস্তুতি প্রতিটি খেলোয়াড় নির্বাচনেই মূল বিবেচ্য। বিষয়টি নিয়ে আনচেলত্তি বলেন, ‘নেইমারের টেকনিক্যাল সামর্থ্য নিয়ে কেউই প্রশ্ন তুলতে পারবে না। আমরা প্রতিদিন যে জিনিসটা মূল্যায়ন করি, এবং প্রতিটি ম্যাচের আগে যেটা বিবেচনা করি, তা হলো খেলোয়াড়ের শারীরিক ফিটনেস। এটা কেবল নেইমারের ক্ষেত্রেই নয়, বরং দলের প্রতিটি সদস্যের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
বিশ্বকাপের জন্য তিনি কেমন দল তিনি চাইছেন, তার একটি পরিষ্কার ধারণা এখনই আছে আনচেলত্তির কাছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় ৭০ জন খেলোয়াড়কে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, তবে চূড়ান্ত স্কোয়াডে থাকবে তারাই যারা পুরোপুরি ফিট এবং দলের কৌশলগত পরিকল্পনায় মানিয়ে নিতে সক্ষম।
আনচেলত্তি নেইমারের প্রতি সম্মান রেখে বলছেন, সিদ্ধান্তটি মূলত ফিটনেস ও কৌশলগত পরিকল্পনার ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই মানের বা দক্ষতার দিকে তাকাবো, কিন্তু সেইসঙ্গে খেলোয়াড়ের ১০০ শতাংশ ফিট থাকা এবং দলগতভাবে খেলার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতাও গুরুত্বপূর্ণ।’
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৫ সেপ্টেম্বর ঘরের মাঠে চিলির মুখোমুখি হবে ব্রাজিল। এরপর ১০ সেপ্টেম্বর বলিভিয়ার মাঠে তাদের মুখোমুখি হবে আনচেলত্তির শিষ্যরা। ইতোমধ্যে সেলেসাওদের বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত হয়েছে। বর্তমানে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয়স্থানে আছে তারা।