বিজেপিশাসিত কর্নাটকে ‘১৬ শতাংশ মুসলিম ছাত্রী’ টিসি নিয়েছে

ভারতের বিজেপিশাসিত রাজ্য কর্নাটকের কিছু কলেজের ১৬ শতাংশ মুসলিম ছাত্রী তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করেছে বা ছাড়পত্র (টিসি) নিয়েছে। টিসি নেওয়া শিক্ষার্থীদের অনেকে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছে, অনেকে একেবারে পড়াশোনাই ছেড়ে দিয়েছে। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়।
হিজাব নিষিদ্ধের কর্নাটক হাইকোর্টের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে করা শিক্ষার্থীদের আবেদনের শুনানি হয় আজ। শিক্ষার্থীদের আবেদনের বিষয়ে আজ ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত নোটিশ জারি করেন।
আজ ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে কর্নাটকের আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, সরকারি কর্তৃপক্ষ সৎ মায়ের মতো আচরণ করে। এ কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের ধর্ম পালন করতে পারছে না এবং রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ভারতের সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদে মৌলিক ধর্মীয় রীতি পালনের অধিকারের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু উচ্চ আদালত এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ মনযোগ দেয়নি।’
ওই শিক্ষার্থী আদালতে বলেন, ‘মাথায় কাপড় বা হিজাব পরা ইসলামের মৌলিক চর্চা।’
পরে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। উচ্চ আদালত কোনো পক্ষকে বিশেষ সুবিধাও দেবে না বলে আশ্বস্ত করেন।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, কর্নাটকে হিজাব বিতর্কের জেরে ম্যাঙ্গালোর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর ১৬ শতাংশ মুসলিম ছাত্রী টিসি নিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে অন্য কলেজে ভর্তি হয়েছে। আবার অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, দক্ষিণ কন্নড় ও উডুপি জেলার কলেজগুলোতে ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন কোর্সে ৯০০ মুসলিম ছাত্রী ভর্তি হয়। তাঁদের মধ্যে ১৪৫ জন টিসি নিয়েছে। দক্ষিণ কন্নড় ও উদুপিতে ৩৯টি সরকারি এবং ৩৬টি সহায়তাভুক্ত কলেজ আছে। সরকারি কলেজ থেকেই বেশি টিসি নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
গত বছরের ডিসেম্বরে কর্ণাটকে মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরে ক্লাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া নিয়ে শুরু হয় ঘটনার সূত্রপাত। এরপর বছরের শুরুতে হিন্দুত্ববাদী বিজেপির রাজ্য সরকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করে আদেশ দেয়।