শুল্ক বৃদ্ধি আরও ৯০ দিন স্থগিত রাখতে একমত যুক্তরাষ্ট্র-চীন

চলতি বছরের শুরুর দিকে ঘোষিত তিন অঙ্কের শুল্ক আরোপ আরও ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখতে একমত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। ফলে আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত শুল্ক স্থগিতের মেয়াদ বাড়ল।
দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে ঘোষিত তিন অঙ্কের শুল্ক আরোপ আরও ৯০ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে। গত মাসে অনুষ্ঠিত আলোচনাকে উভয় পক্ষই “গঠনমূলক” হিসেবে আখ্যা দেয়। খবর বিবিসির।
স্থানীয় সময় সোমবার (১১ আগস্ট) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা স্থগিত রাখবে এবং চীনও ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিরতি অব্যাহত রাখবে। বর্তমানে চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ৩০ শতাংশ এবং মার্কিন পণ্যে চীনের শুল্ক ১০ শতাংশ বহাল থাকবে।
হোয়াইট হাউস জানায়, এই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস, অন্যায্য বাণিজ্য অনুশীলন মোকাবিলা, মার্কিন রপ্তানি বাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিষয় সমাধানে আলোচনা চলবে। ২০২৪ সালে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার, যা যে কোনো একক দেশের সঙ্গে সর্বোচ্চ।
চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে পারস্পরিক লাভজনক সহযোগিতাই সঠিক পথ; দমন-পীড়ন কোনো ফল বয়ে আনবে না।” চীন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অযৌক্তিক’ বাণিজ্য বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।
এপ্রিল মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্যাপক নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা চরমে ওঠে। চীনের পাল্টা শুল্ক আরোপে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। মে মাসে কিছু ব্যবস্থা শিথিল করা হলেও শুল্কের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল।
দুই দেশের আলোচনায় এখনও চীনের বিরল খনিজে প্রবেশাধিকার, রাশিয়ার তেল ক্রয় এবং উন্নত প্রযুক্তি রপ্তানি সীমাবদ্ধতা—বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টর বিক্রি নিয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র কিছু রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে, যার ফলে এএমডি ও এনভিডিয়ার মতো কোম্পানি চীনে নির্দিষ্ট চিপ বিক্রি করতে পারছে, তবে এর বিনিময়ে তাদের আয়ের ১৫ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে দিতে হচ্ছে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম টিকটককে চীনা মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স থেকে আলাদা করার জন্য চাপ দিচ্ছে, যা বেইজিং দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রের চীন থেকে আমদানি ১৫ শতাংশ এবং চীনে রপ্তানি প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে। জুন মাসে আমদানি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায়।