মিয়ানমারে ‘পরিকল্পিত নির্যাতনের’ প্রমাণ মিলেছে : জাতিসংঘ

জাতিসংঘের তদন্তকারীরা মিয়ানমারে আটক কেন্দ্রগুলোতে পদ্ধতিগত নির্যাতনের প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। আন্তর্জাতিক আইনের সম্ভাব্য লঙ্ঘন পরীক্ষা করার জন্য গঠিত স্বাধীন তদন্ত ব্যবস্থা (আইআইএমএম) মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের ওপর শারীরিক নির্যাতন, বৈদ্যুতিক শক, শ্বাসরোধ ও প্লায়ার্স দিয়ে নখ তুলে ফেলার মতো নৃশংসতা চালানো হয়েছে। খবর আলজাজিরার।
আইআইএমএম-এর প্রধান নিকোলাস কৌমজিয়ান বলেন, আমরা প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্যসহ যথেষ্ট প্রমাণ পেয়েছি, যা মিয়ানমারের আটক কেন্দ্রগুলোতে পদ্ধতিগত নির্যাতনের ইঙ্গিত দেয়।
জাতিসংঘের এই দল আরও জানায়, নির্যাতনের ফলে কিছু বন্দির মৃত্যুও হয়েছে। শিশুদের ওপরও নির্যাতন চালানো হয়েছে, যাদের প্রায়শই তাদের নিখোঁজ বাবা-মায়ের পরিবর্তে বেআইনিভাবে আটক রাখা হতো।
তদন্ত দলটি অপরাধীদের মধ্যে উচ্চপদস্থ সামরিক কমান্ডারদের চিহ্নিত করেছে, তবে তদন্তে বাধা সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কায় তাদের নাম প্রকাশ করেনি। আইআইএমএম তথ্য ও মিয়ানমারে প্রবেশের জন্য দুই ডজনেরও বেশি অনুরোধ করলেও কোনো উত্তর পায়নি। মিয়ানমারের সামরিক কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। সেনাবাহিনী বারবার নৃশংসতার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
আইআইএমএম-এর প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, সরকারি বাহিনী ও সশস্ত্র বিরোধী দল উভয়ই সংক্ষিপ্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে অস্থিরতা শুরু হয়, যা দেশজুড়ে সংঘাত সৃষ্টি করে। ভিন্নমত দমন করতে সামরিক বাহিনী হাজার হাজার মানুষকে আটক করেছে বলে জাতিসংঘের অনুমান। গত মাসে সামরিক সরকারের নেতা মিন অং হ্লাইং চার বছরের জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করেন।

আইআইএমএম-এর তদন্তে ২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া নির্যাতনের ঘটনাগুলো অন্তর্ভুক্ত আছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর অভিযান, যার ফলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় ও অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর চালানো নৃশংসতাও রয়েছে।