চলে গেলেন হলিউডের শতবর্ষী ‘স্পার্টাকাস’

হলিউড ‘স্বর্ণযুগের’ অন্যতম অভিনেতা কার্ক ডগলাস আর নেই। ছয় দশকের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারসমৃদ্ধ এই কিংবদন্তি অভিনেতা গতকাল বুধবার ক্যালিফোর্নিয়ার বেভারলি হিলসে তাঁর নিজ বাড়িতে ১০৩ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
কার্ক ডগলাসের ছেলে অস্কারজয়ী অভিনেতা মাইকেল ডগলাস তাঁর ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বাবার মৃত্যুর খবর জানান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
মাইকেল ডগলাস ফেসবুকে বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রচণ্ড দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে আমার ভাইদের সঙ্গে নিয়ে জানাচ্ছি যে কার্ক ডগলাস আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।’
মাইকেল ডগলাস বলেন, ‘দুনিয়ার কাছে তাঁর পরিচয় একজন কিংবদন্তি, চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের অভিনেতা... কিন্তু আমার ও আমার ভাই জোয়েল ও পিটারের কাছে তিনি কেবল একজন বাবা।’
আবেগঘন বিবৃতির শেষাংশে মাইকেল ডগলাস বলেন, ‘তাঁর শেষ জন্মদিনে তাঁকে যে কথাগুলো বলেছিলাম, তা দিয়েই শেষ করছি। কথাগুলো সব সময় সত্য হয়ে থাকবে। বাবা, আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি, আর খুব গর্ববোধ করি যে আমি তোমার ছেলে।’
মঞ্চ ও বড়পর্দায় বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সুপরিচিত এই বাঘা অভিনেতা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন ১৯৬০ সালে মুক্তি পাওয়া ধ্রুপদি চলচ্চিত্র ‘স্পার্টাকাস’-এ মূল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য।
একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক ও লেখক কার্ক ডগলাসের জন্ম ১৯১৬ সালে নিউইয়র্কে। অভিবাসিত মা-বাবা ও ছয় বোন নিয়ে দারিদ্র্যপীড়িত শৈশব কাটানোর পর ১৯৪৬ সালে অভিনেত্রী বারবারা স্ট্যানউইকের সঙ্গে ‘দ্য স্ট্রেঞ্জ লাভ অব মার্থা আইভার্স’ (১৯৪৬) দিয়ে কার্ক চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৫০-এর দশকে কার্ক হয়ে ওঠেন মার্কিন চলচ্চিত্র জগতের সেরা বক্স-অফিস তারকাদের অন্যতম। ছয় দশকের ক্যারিয়ারে কার্ক ৯০টির বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
১৯৪৯ সালে ‘চ্যাম্পিয়ন’ চলচ্চিত্রে বক্সিং হিরো চরিত্রে ডগলাসের অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়। ওই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেতা’ বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের (অস্কার) মনোনয়ন পান। তাঁর অভিনীত শুরুর দিকের অন্যান্য চলচ্চিত্র হলো—লরেন বাকল ও ডোরিস ডের সঙ্গে ‘ইয়াং ম্যান উইথ আ হর্ন’ (১৯৫০); জ্যান স্টার্লিংয়ের সঙ্গে ‘এইস ইন দ্য হোল’ (১৯৫১), ও ‘ডিটেকটিভ স্টোরি’ (১৯৫১)। ‘দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য বিউটিফুল’ (১৯৫২) ছবিতে অভিনয়ের জন্য এবং ‘লাস্ট ফর লাইফ’ (১৯৫৬) ছবিতে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ভিনসেন্ট ভ্যান গগ চরিত্রে অভিনয় করে দুই দফা অস্কার মনোনয়ন লাভ করেন ডগলাস।
অভিনেতা ও মানবহিতৈষী হিসেবে ডগলাস তিনবার অস্কারের মনোনয়ন পান। ১৯৯৬ সালে তাঁকে সম্মানসূচক অস্কারে ভূষিত করা হয়। এ ছাড়া ডগলাস ১০টি উপন্যাসসহ লিখেছেন স্মৃতিকথাও। ২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর কার্ক ডগলাসের শতবর্ষ পূর্ণ হয়।