বিএফডিসিতে বৃক্ষ নিধন

গতকাল শুক্রবার ছিল প্রথম রোজা, আর এ কারণে এফডিসি চত্ত্বরও ছিল নীরব। এরই মধ্যে দেখা গেল সাউন্ড কমপ্লেক্সের সামনের চারটি গাছ কেটে ফেলা হচ্ছ। খবর নিয়ে জানা গেল, কয়েকদিন আগে মৌখিকভাবে টেন্ডারের আয়োজন করে এফডিসি কর্তৃপক্ষ।
১৯ হাজার ৩০০ টাকায় কড়ই জাতীয় চারটি বড় গাছ এফডিসির এক ড্রাইভারকে দিয়ে দেওয়া হয়। এফডিসির জন্মের সময় লাগানো পুরনো গাছ কেন কাটা হচ্ছে এর সদোত্তর কেউ দিতে পারেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এই ধরনের ছোট কাজে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দিয়েই কয়েক জনকে ডেকেই কাজগুলো দিয়ে দেই। এর আগে, এই গাছের মতো আরো অনেক জিনিস এভাবেই টেন্ডার ডাকা হয়।’
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিত্র পরিচালক অভিযোগ করে বলেন, ‘কয়েকদিন আগে এখানে আমি একটি দৃশ্য চিত্রায়ন করেছি। বৃষ্টির জন্য কয়েকদিন শুটিং বন্ধ রেখেছিলাম। আজ এসে দেখি এখানে গাছ নেই। এখন আমার হয় আগের শুটিং ফেলে দিতে হবে, অন্যথায় আগের ছবি দেখে একই ধরনের গাছের ডামি বানিয়ে দেখাতে হবে। যারা এখানে অনেক শুটিং করেছে তারা সমস্যায় পড়বে। কারণ লোকেশন মিলবে না’। নাম লিখতে চাইলে এই পরিচালক বলেন, নাম প্রকাশ হলে এফডিসিতে কাজ করতে তাঁর সমস্যা হবে। তাই তিনি অনুরোধ করেন যেন প্রতিবেদনে নাম উল্লেখ করা না হয়।
গাছ কাটার কারণ জিজ্ঞেস করায় সাউন্ড কমপ্লেক্সের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘শুনেছি এখানে নাকি ফুলের বাগান করা হবে। গাছগুলোর অনেক বছর বয়স, অনেক পুরাতন এজন্য কাটা হচ্ছে। নতুন করে আরো গাছ লাগানো হবে।’
পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দিয়ে সরকারি গাছ কি এভাবে কাটা যায়? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের এফডিসির নিয়ম আছে যে, আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হয় না। আরে কত জিনিশ এভাবে বিক্রি হচ্ছে, এত সামান্য কয়েকটা গাছ। এগুলো বাইরে ছিল বলে আপনারা দেখছেন। ভিতরে আরো কতকিছু হচ্ছে!’
পত্রিকায় টেন্ডার আহ্বান না করে কীভাবে আপনারা নিজেরাই মালামাল ভাগাভাগি করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কর্মকর্তা অনেকটা অনুরোধের সুরে বললেন, ‘এসব উত্তর আমি দিতে পারব না। আমরা ভাই ছোট চাকরি করি, আমাদের নাম লিখলে চাকরি চলে যাবে। রবিবার এমডি স্যার বসবেন, তখন এসে এ বিষয়ে জেনে যাবেন’।