চিরবিদায় ওমর শরিফ

চলে গেলেন হলিউডের সোনালি যুগের দাপুটে অভিনেতা ওমর শরিফ। কায়রোর এক হাসপাতালে আজ সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৩ বছর বয়স্ক এই অভিনেতা। তাঁর এজেন্ট স্টিভ কেনিস এই মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন বলে জানা গেল গার্ডিয়ানের খবরে।
এ বছরের মে মাসে এই বিখ্যাত মিসরীয় অভিনেতার একমাত্র ছেলে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা আলঝেইমার রোগে ভুগছেন। লরেন্স অব অ্যারাবিয়া, ডক্টর জিভাগো, চেঙ্গিস খান, ম্যাকেনাস গোল্ড-এর মতো বিখ্যাত ছবির এই অভিনেতা মোটামুটি পর্দার আড়ালেই ছিলেন বহুদিন ধরে।
ডেভিড লিনের ক্লাসিক ছবি ‘লরেন্স অব অ্যারাবিয়া’র জন্য অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিলেন ওমর। এই ছবিতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরেক বিখ্যাত অভিনেতা পিটার ও’ টুল। এ ছাড়া বিখ্যাত ‘চেঙ্গিস খান’ ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। ডেভিড লিনের সঙ্গে দুর্দান্ত জুড়ি ছিল তাঁর। লরেন্স অব অ্যারাবিয়ার সাফল্যের বিষয়ে বলেছিলেন, ‘এ ছবিতে কোন মেয়ে নেই, খালি ছেলে দিয়ে ভর্তি। আবার তেমন কোনও অ্যাকশনও নেই। মারপিটও নেই। কিছুই নেই বলতে গেলে...তারপরও ছবিটা ছিল দুর্দান্ত। কারণ পরিচালক ডেভিড লিন ছিলেন দারুণ মেধাবী এক মানুষ।’
ওমর শরিফের ক্যারিয়ার শুরু ১৯৫৩ সালে। মিসরীয় ছবির নিয়মিত অভিনেতা থেকে হলিউডে তাঁর আবির্ভাব ঘটে ১৯৬২ সালের ক্ল্যাসিক ছবি ‘লরেন্স অব অ্যারাবিয়া’র মাধ্যমে। প্রথম ছবিতেই অস্কার মনোনয়ন পান তিনি। সঙ্গে জিতে নেন গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড।
অভিনেত্রী ফাতিন হামামার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর, পরে অবশ্য বিচ্ছেদও হয়।
২০১৩ সালে একটি ছবিতে শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ছবিটির নাম রক দ্য কাসবাহ্। অভিনয়ের পাশাপাশি তাসের প্রতি দারুণ আগ্রহ ছিল তাঁর। ব্রিজ খেলায় রীতিমতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন খেলোয়াড় ছিলেন তিনি।
২০০৫ সালের নভেম্বর বিশ্ব চলচ্চিত্রের প্রতি অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে সের্গেই আইজেনস্টাইন মেডেল দেওয়া হয় ইউনেস্কোর তরফ থেকে।
কিংবদন্তি এই অভিনেতার স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।