গর্ভাবস্থায় বেশি খেলে কি প্রসবে সমস্যা হয়?

আমাদের দেশে গর্ভবতী মায়েরা নানা রকম কুসংস্কারে আচ্ছন্ন। গর্ভাবস্থায় মায়েদের একটু বেশি খেতে হয়। ভাত, মাছ, মাংস, শাকসবজি সবকিছুই অন্যান্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি খেতে হয়। গর্ভস্থ শিশুর পুষ্টি সরবরাহের জন্যই এই বাড়তি খাবারের আয়োজন।
তবে মায়েরা এই বাড়তি খাবার না খেয়ে উল্টো কম করে খাদ্য গ্রহণ করেন। তাঁদের ধারণা, বেশি করে খেলে গর্ভস্থ শিশু আকারে বড় হয়ে যাবে, শিশুর মাথা আকারে বড় হবে এবং প্রসবে অসুবিধা হবে। এই ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী মায়েরা নিজেও অপুষ্টিতে ভোগেন এবং গর্ভস্থ শিশুকেও অপুষ্টিতে ভোগান। তবে প্রসবের অসুবিধার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রসবের অসুবিধা হয় বিভিন্ন কারণে, যেমন—শারীরিক গঠন, জরায়ুতে শিশুর অবস্থান, গর্ভফুলের অবস্থান, গর্ভবতী মা ও গর্ভস্থ শিশুর অসুস্থতা ইত্যাদি।
আবার প্রসবের সমস্যা সৃষ্টির জন্য এমন কিছু কারণ রয়েছে, যে ক্ষেত্রে প্রসবের জন্য সিজারিয়ান সেকশন দরকার পড়বেই। আবার কিছু কিছু উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণেও জরুরি মুহূর্তে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করতে হয়। প্রসবের সমস্যা হওয়া এবং সিজারিয়ান লাগা না-লাগার সঙ্গে বেশি খাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। কাজেই স্বাভাবিক প্রসবের আশায় অযথা কম খাওয়ার কোনো মানে হয় না; বরং এতে প্রসবের ঝুঁকি আরো বাড়ে এবং অপরিণত শিশুর জন্ম হয়। মা ও শিশু উভয়ই দুর্বলতায় ভোগে। তবে যেসব মায়ের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে খাওয়া-দাওয়ার কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। তবে নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য প্রসবপূর্ব চেকআপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই খাওয়া-দাওয়াকে সংকুচিত না করে গর্ভধারণের পরই চিকিৎসকের পরামর্শমতো চলাই হলো সঠিক কাজ।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।