বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস
আমাদের হাত, আমাদের ভবিষ্যৎ

১৫ অক্টোবর, বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস। হাত ধোয়ার গুরুত্ব ও তার উপকারিতা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী মানুষকে সচেতন করতেই এ দিবসটির আয়োজন। নানা রকম প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ডের ভেতর দিয়ে উদযাপন করা হয় দিবসটি। প্রতিবছরই একটি প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়। এ বছর বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের হাত, আমাদের ভবিষ্যৎ’।
হাত ধোয়া এমন একটি অভ্যাস, যা আমাদের রোগজীবাণু থেকে অনেকখানি দূরে সরিয়ে রাখতে পারে। আমরা কাজ করি। নানা রকম জায়গায় যাই। নানা জায়গায় হাত লাগাই। সেই হাতে লেগে যায় রোগজীবাণু।
স্যালমোনেলা (টাইফয়েডের জীবাণু), ই কোলাই, নরভাইরাস প্রভৃতি জীবাণু হাত থেকে মুখ হয়ে পেটে যায়। এসব জীবাণু আমাদের টাইফয়েড, ডায়রিয়াসহ পেটের আরো কিছু অসুখ তৈরি করে। এডোনাভাইরাস শ্বাসনালিতে সংক্রমণ ঘটায়। অথচ বাইরে থেকে ফিরে টয়লেট থেকে বেরিয়ে বা খাবার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুলে এসব জীবাণুর ৬০ শতাংশের বেশি মারা পড়ে।
বিশ্বে প্রতিবছর ১৮ লাখ শিশু (যাদের বয়স পাঁচ বছরের নিচে) ডায়রিয়ায় মারা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, সাবান দিয়ে হাত ধুলে এই শিশুদের প্রতি তিনজনে একজন ডায়রিয়া থেকে এবং পাঁচজনে একজন শ্বাসনালির সংক্রমণ বা নিউমোনিয়া থেকে রক্ষা পেত।
গবেষণায় আরো দেখা গেছে, স্কুলের শিশুরা সাবান দিয়ে হাত ধুলে তাদের স্কুলের উপস্থিতির সংখ্যা বেড়ে যায়। অর্থাৎ তাদের রোগ কম হয় এবং ভালোভাবে স্কুলে আসতে পারে। তাই অল্প বয়সে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস তৈরি হলে সেটা সুস্থ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজে লাগে।
হাসপাতালে হাত ধোয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস। অনেকে বাইরে থেকে রোগী দেখতে এসে হাত না ধুয়েই রোগীর গায়ে হাত দেয়। নবজাতক শিশুদের কোলে নয়ে, আদর করে অনেকেই। এটি ক্ষতিকর অভ্যাস। এসব রোগী ও শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই এদের ধরার আগে সাবান বা জীবাণুনাশক তরল দিয়ে হাত ধুয়ে নেওয়া খুবই জরুরি।
বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসে এই বার্তাগুলো সবার জন্য ছড়িয়ে দিতে হবে। সুস্থ নাগরিকই গড়ে তুলতে পারে সুস্থ ভবিষ্যৎ।
লেখক : রেসিডেন্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।