উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অচল এক্স-রে মেশিন, দুর্ভোগে রোগীরা

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। রোগ নির্ণয়ের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এই যন্ত্রটি সচল করতে কর্তৃপক্ষের একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনও কোনো স্থায়ী সমাধান মেলেনি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর আগে স্থাপিত অ্যানালগ এক্স-রে মেশিনটি শুরু থেকেই নানা যান্ত্রিক সমস্যায় জর্জরিত ছিল। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবরে মেরামতের পর কিছুদিন সচল থাকলেও আবারও বিকল হয়ে পড়ে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাধারণত ৭০ থেকে ১০০ টাকায় এক্স-রে করা গেলেও এখন রোগীদের বিকল্প হিসেবে বেসরকারি ক্লিনিকে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। প্রতিদিন গড়ে ৫০ জন রোগীকে এক্স-রে পরীক্ষার জন্য বাইরের বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে রেফার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিনের অপারেটর আব্দুল আলীম বলেন, যন্ত্রটি সচল করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে ৫০ বারেরও বেশি চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু বাজেট ঘাটতি ও প্রশাসনিক জটিলতায় এখনও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই যন্ত্রটি অচল থাকায় শুধু রোগীরাই নন, চিকিৎসকদেরও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। অনেক সময় জরুরি রিপোর্ট না পাওয়ায় রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় না।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মামুন উর রশিদ জানান, ছয় মাস আগে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান একবার মেরামতের চেষ্টা করলেও মেশিনটি পুরোপুরি সচল হয়নি। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।
সাটুরিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আ খ ম নুরুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাটুরিয়া, ধামরাই ও নাগরপুরের লাখো মানুষের নির্ভরতার স্থল এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। একটি অ্যানালগ এক্স-রে মেশিন বছরের অধিকাংশ সময় বিকল থাকে। এখন সময় এসেছে একটি আধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ দেওয়ার।
সাটুরিয়া উপজেলার সাধারণ মানুষের দাবি, অচল যন্ত্রটি মেরামতের পাশাপাশি দ্রুত একটি আধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন স্থাপন করে সাটুরিয়াবাসীর ভোগান্তি লাঘব করা হোক।