ডায়াবেটিস রোগীরা কি চিনির বদলে গুড় খেতে পারবে?

অনেকেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এ জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের জীবন যাপন পদ্ধতি ও খাদ্যাভ্যাস দায়ী। কেউ কেউ মনে করেন, মিষ্টি বেশি খেলেই নাকি শরীরে ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। বিষয়টা এমন কিন্তু নয়। তবে একবার এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবারে রাশ টানতেই হবে। একেবারে বন্ধ করে দিতে পারলে আরও ভালো। অনেক ডায়াবেটিস রোগী রান্নায় চিনি খান না, তবে তাদের রান্না ঘরে চিনির পরিবর্তে গুড় থাকে। এই অভ্যাস কি আদৌ তাদের পক্ষে স্বাস্থ্যকর?
গুড় প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এক ধরনের মিষ্টি। সাধারণত খেজুরের রস কিংবা আখের রস জ্বাল দিয়ে এটি তৈরি করা হয়। গুড়ে ভাল মাত্রায় পটাশিয়াম, আয়রন ও ক্যালশিয়াম থাকে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গুড় খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। ১০০ গ্রাম গুড়ে ৩৮৩ ক্যালোরি, ৬৫ থেকে ৮৫ শতাংশ সুক্রোজ থাকে এবং ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজ থাকে, যা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। গুড়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেকটাই বেশি, তাই গুড় খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে গুড় চিনির মতোই ক্ষতিকর ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিনের ডায়েটে গুড় থাকলে কিডনির সমস্যা, হার্টের সমস্যা, এমনকি শরীরের অন্যান্য অঙ্গও বিকল হয়ে যেতে পারে। তাই প্রথম থেকেই সতর্ক না হলে মুশকিল।
চিনি যদি একেবারে বাদ দিতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করতে পারেন। অনেকেই কৃত্রিম চিনি খেতে ভয় পান।
ভারতীয় চিকিৎসক অদ্রিজা রহমানের মতে, ‘বিদেশে দীর্ঘদিন ধরে লোকেরা ‘নো ক্যালোরি সুগার’ বা কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করে আসছেন। এ ধরনের চিনি শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে দিতে পারে, এমন প্রমাণিত হলে বিদেশের বাজারে এই পণ্য সবার আগে বন্ধ করা হত। চিনি খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একেবারেই ভালো নয়। এটির পরিবর্তে কোনো ভাল সংস্থার কৃত্রিম চিনি খেতে পারেন তাঁরা। তবে অবশ্যই মাত্রাতিরিক্ত নয়। মিষ্টি খেতে ইচ্ছা করছে বলেই ডায়াবেটিসের রোগীরা যদি কৃত্রিম চিনি দিয়ে মিষ্টি বানিয়ে খেয়ে মনে করেন, স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে না, সে ধারণা কিন্তু একেবারেই ভুল।
সে ক্ষেত্রে আপনার শরীরে ছানা বা ময়দার মতো উপাদানও যাচ্ছে। ফলে আপনার সারা দিনের ‘ক্যালোরি কাউন্ট’ কিন্তু বেড়ে যাবে। সঙ্গে বাড়বে রক্তে শর্করার মাত্রাও।’’