চিকিৎসক সংকটে পাঁচবিবি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রোগীদের ভোগান্তি

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও কর্মচারীর তীব্র সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। একসময় চিকিৎসা সেবা ও ব্যবস্থাপনায় দেশসেরা স্বীকৃতি পাওয়া এই হাসপাতাল এখন জনবল ঘাটতিতে ভুগছে।
প্রতিদিন আউটডোরে ২০০ থেকে ৩০০ রোগী চিকিৎসা নেন এবং প্রায়ই ৫০ শয্যার হাসপাতালে ৮০ থেকে ১০০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। কিন্তু যেখানে ১৩ জন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা, সেখানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৪ জন। ফলে প্রতিদিন শতাধিক রোগীর ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বল্পসংখ্যক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও পর্যাপ্ত জনবল ও রিএজেন্টের অভাবে তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
সবচেয়ে গুরুতর সংকট দেখা দিয়েছে গাইনি বিভাগে। নিয়ম অনুযায়ী একজন গাইনি বিশেষজ্ঞ থাকার কথা থাকলেও পোস্টিংপ্রাপ্ত চিকিৎসক তদবিরে ঢাকায় ডেপুটেশনে থাকায় পদটি কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। ফলে এখানে নিয়মিত সিজারিয়ান অপারেশন (সিজার) করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে গর্ভবতী মা ও তাদের পরিবার মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ছেন।
হাসপাতালের নার্সরা অভিযোগ করেন, সীমিত জনবল নিয়ে তাদের একাধিক ওয়ার্ড, বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে ডিউটি করতে হয়। এতে রোগীদের প্রত্যাশিত সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট থাকার কথা ১১ জন, আছে ৫ জন; আবাসিক মেডিকেল অফিসার থাকার কথা ১ জন, নেই কেউ; সহকারী সার্জন থাকার কথা ৫ জন, আছে ২ জন; মেডিকেল অফিসার থাকার কথা ১৩ জন, আছে ৪ জন; আর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থাকার কথা ১১০ জন, আছেন মাত্র ৫২ জন।
রোগী ও অভিভাবকরা জানান, আগে যেখানে চিকিৎসা সেবার মান ভালো ছিল, এখন তা অনেকটা কমে গেছে। অনেক সময় ডাক্তার পাওয়া যায় না, জটিল রোগীদের বেসরকারি ক্লিনিক বা জেলা শহরে রেফার করা হয়।
পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. তরুণ কুমার পাল বলেন, ৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও রোগী থাকেন ১০০ জনের বেশি। চিকিৎসক সংকট রয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কম থাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ নানা কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। একজন গাইনি বিশেষজ্ঞ থাকার কথা থাকলেও তিনি এখনও ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত আছেন।