সিসিএইচএসটির এমডি মো. আখতারুজ্জামানকে তলব

এখতিয়ার বহির্ভূত ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যক্রমের জন্য ব্যাখ্যা চেয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের (সিসিএইচএসটি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আখতারুজ্জামানকে তলব করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর যুগ্ম সচিব শারাবান তাহুরা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নোটিশ দেওয়া হয়।
নোটিশে বলা হয়, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট্রের গত ৭ জুলাইয়ের ১৮৪ নম্বর স্মারকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের ট্রাস্টে পদায়ন সংক্রান্ত অফিস আদেশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, আপনি ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওএসডি উপপরিচালককে পরিচালক (পরিকল্পনা ও মনিটরিং) পদে, সহকারী পরিচালককে পরিচালক (মাঠ প্রশাসন) পদে এবং মেডিকেল অফিসারকে পরিচালক (প্রশিক্ষণ) পদে পদায়ন করেছেন; এবং পরবর্তীতে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট্রের গত ৮ জুলাইয়ের ১৮৯ নম্বর অফিস আদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওএসডি মেডিকেল অফিসারকে উপপরিচালক (আইসিটি, গবেষণা ও সমন্বয়) পদে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে উপপরিচালক (মাঠ প্রশাসন) এবং উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও মনিটরিং) পদে পদায়ন করেছেন, যা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এখতিয়ারাধীন।
নোটিশে আরও বলা হয়, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ফেসবুক পেজে ৬৩৪ জন কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ প্রোভাইডারকে (সিএইসিপি) বেতন-ভাতা প্রদানের আদেশ দিয়েছেন মর্মে উল্লেখ করেছেন। নিজেকে কোমল হৃদয়ের মানুষ হিসেবে উল্লেখ করে তাদের কান্নাকাটি সহ্য করতে না পেরে তাদের বেতন-ভাতা প্রদান করে আপনি ফেসবুকে আনন্দ-বেদনা মিশ্রিত অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে উক্ত ৬৩৪ জন সিএইচসিপির বেতন-ভাতা প্রদানের অনুমোদনের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আপনি এবং পরবর্তীতে ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি পত্র প্রেরণ করেছেন, যা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বিবেচনাধীন রয়েছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও সিদ্ধান্ত ব্যতীত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের এ ধরনের আদেশ প্রদান এখতিয়ার বহির্ভূত।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নোটিশে বলা হয়, এমতাবস্থায়, উল্লিখিত শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও এখতিয়ার বহির্ভূত কার্যক্রমের জন্য কেন আপনার বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা ২০১৮’ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার ব্যাখ্যা পত্র প্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে দাখিল করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। সেই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এতদ সংক্রান্ত পত্র ও আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করা হলো। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব প্রদানের ব্যর্থতায় বিধিমোতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
বকেয়া বেতনের দাবিতে গত ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর আন্দোলনে নামেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি কর্মীরা)। তারা দাবি করেন, গত ১৫ মাস তারা কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। তাদের আন্দোলনের একদিন পর বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের (সিসিএইচএসটি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান তাদের বেতন-ভাতা চালুর আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।
এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সিসিএইচএসটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘তখন কোনো একটা ভুলের জন্য বা অন্য কোনো কারণে ৬৩৪ জনকে বাদ দিয়ে ১৩ হাজার ২৮৯ জনকে বেতন দেওয়া শুরু করা হয়। তারা (৬৩৪ জন) কাজও করছেন, অনুমোদনও আছে, তাদের বরাদ্দও আছে, কিন্তু বেতন পাচ্ছেন না। কেন এমন জটিলতা হয়েছে, তা আমি ঠিক বলতে পারছি না।’