মেনোপজের লক্ষণ কী?

নির্দিষ্ট বয়সে প্রাকৃতিক নিয়মে একজন মেয়ের ঋতুস্রাব শুরু হয়। এ সময়কে বয়ঃসন্ধিকাল বলা হয়।
অন্যদিকে একটি নির্দিষ্ট বয়সে গিয়ে আবার ওই নারীর ঋতুস্রাব বন্ধ হয়। এটি রজনিবৃত্তি বা মেনোপজ। সাধারণত ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সে একজন নারীর মেনোপজ ঘটে থাকে। তবে কারো ক্ষেত্রে আরো আগে মেনোপজ হতে পারে।
কী কারণে মেনোপজ ঘটে?
প্রতি ঋতুস্রাবে ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম্বাণু পরিপূর্ণ হয়। এ সময় ইসট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন ( এটি নারী হরমোন নামে পরিচিত) হরমোন তৈরি হয়। তবে যখন ডিম্বাশয় থেকে আর ডিম্বাণু তৈরি হয় না, তখন ওইসব নারীর হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়। এ কারণে জরায়ু থেকে আর নিয়মিত ঋতুস্রাব হয় না। যখন পুরো এক বছর এভাবে ঋতুস্রাব বন্ধ থাকে,তখন ধরে নেওয়া যায় যে ওই নারীর মেনোপজ হয়েছে।
আর কী কারণে মেনোপজ হতে পারে?
* অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জরায়ু অপসারণ করা হলে।
* ক্যানসার চিকিৎসার জন্য তলপেটে রেডিয়েশন বা কেমোথেরাপি দেওয়া হলে।
* কোনো কোনো পরিবারে ইতিহাসে কম বয়সে মেনোপজের ঘটনা পাওয়া যায়-এ পরিবারের মেয়ে সদস্যদেরও অল্প বয়সে মেনোপজ হয়।
লক্ষণ
মেনোপজ নারী জীবনের একটি স্বাভাবিক অধ্যায়। কোনো কোনো নারীর ক্ষেত্রে তেমন কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় না। তবে বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রে লক্ষণ থাকে। যেমন-
হট ফ্লাস বা গরম ঝলকানি
এই লক্ষণটি নারীরা সবচেয়ে বেশি অনুভব করে থাকেন। কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে অনুভূতি। হট ক্লাসের সময় মুখমণ্ডল,ঘাড়,গলা লালাভ হয়ে ঘেমে যেতে পারে। কেউ কেউ দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন। কারো কারো হৃদস্পন্দন দ্রুত হতে পারে, মানসিক উত্তেজনা বাড়তে পারে। দিনে বা রাতে এই হট ফ্লাস কয়েকবার অনুভূত হতে পারে।
বেশি ঘেমে যাওয়া
এটি সাধারণত রাতে ঘুমানোর সময় ঘটে। অত্যধিক ঘামের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
অন্যান্য লক্ষণ
মাথাব্যথা, ক্লান্ত অনুভব করা, দ্রুত উত্তেজিত হয়ে যাওয়া, দৈহিক মেলামেশায় আগ্রহ কমে যাওয়া, হরমোনের তারতম্যের কারণে ভ্যাজাইনার স্বাভাবিক পিচ্ছিলতা কমে জ্বালাপোড়া অনুভব করা, স্তন শিথিল হয়ে যাওয়া, মাথার চুল দ্রুত ঝরা ইত্যাদি।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়