চোখের দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখবেন যেভাবে?
মানবদেহের সংবেদনশীল অঙ্গ চোখ। দিনের পর দিন অতিরিক্ত পরিশ্রমের প্রভাব পড়তে পারে চোখেও। কিছু অভ্যাস আমাদের দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে দেয়। একটানা বই পড়া অথবা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন মোবাইল, কম্পিউটার, ল্যাপটপের বেশি ব্যবহার চোখের দৃষ্টিশক্তি কমিয়ে দেয়। ফলে দৃষ্টিশক্তি কমে আসার আগেই, চোখের যত্ন প্রয়োজন। কিন্তু কীভাবে? ভিটামিন এ রয়েছে এমন খাবার খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়বে। কিন্তু শুধু কি পুষ্টিকর খাবার খেলেই হবে? আর কীভাবে চোখ ভাল থাকবে?
ভারতীয় চক্ষুবিশেষজ্ঞ জয় গোয়েল বলছেন, দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে বেশ কয়েকটি বিষয় জরুরি। চোখের সমস্যা দূর করার জন্য মোবাইলের পর্দায় চোখ রাখার সময় যেমন আটকাতে হবে, তেমনই রয়েছে বেশ কিছু নিয়মও।
১. চোখের সমস্যা থাক বা না থাক নিয়ম করে ছোট থেকে বড় সকলকেই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চোখ পরীক্ষা করানো জরুরি। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, গ্লুকোমার মতো সমস্যা শুরুতে ধরা পড়লে চিকিৎসা অনেক সহজ হয়। চিকিৎসকের কথায়, অনেক সমস্যা শুরুতে ধরা পড়ে না, কিছু লক্ষণ চট করে বোঝাও যায় না। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তা চিহ্নিত হতে পারে।
২. নোংরা হাতে বার বার চোখ রগড়ানো, অন্যের প্রসাধনী, তোয়ালে ব্যবহার করা একেবারেই ঠিক নয়। এতে একজনের থেকে অন্যের সংক্রমণ ঘটতে পারে। চোখ লাল হওয়া, পানি পড়ার মতো সমস্যা হলেও সাবধান হতে হবে। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা সব সময়ই জরুরি। কাজল, আইলাইনার, মাস্কারা, আইশ্যাডো— অনেক কিছুই সাজগোজের জন্য ব্যবহার হয়। দিনের শেষে সেই মেকআপ তুলে ফেলতেই হবে।
৩. সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগনি রশ্মি চোখের ক্ষতি করে। চশমা বা সানগ্লাসে ইউভিএ , ইউভিবি রশ্মি থেকে সুরক্ষার জন্য ভাঁজ থাকা দরকার। তা ছাড়া মোবাইল বা ল্যাপটপের পর্দা থেকে নির্গত রশ্মির হাত থেকে চোখ বাঁচাতে অ্যান্টিগ্লেয়ার লেন্স ব্যবহারের পরামর্শও দেন চিকিৎসকরা।
৪. স্ক্রিন টাইম বা কম্পিউটারের পর্দায় চোখ রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করতে হলে ২০-২০-২০ রুল অনুসরণ জরুরি। এই নিয়ম বলছে ২০ মিনিট অন্তর ২০ সেকেন্ড ধরে ২০ ফুট দূরত্বের কোনো কিছু দেখতে হবে। চোখের সামনে খোলা জানালা থাকলে সেদিকে তাকিয়েও ২০ সেকেন্ড বিরতি নেওয়া যায়।
৫. চোখের জ্যোতি বাড়াতে ভিটামিন এ, সি,ই, ক্যালশিয়াম ও জিঙ্কসহ খনিজ রাখতে হবে খাদ্য তালিকায়। খেতে হবে মাছ, শাকসবজি। পাশাপাশি চোখের পানি যাতে শুকিয়ে না যায়, সেজন্য নিয়ম করে পরিমাণ মতো পানি খাওয়াও জরুরি। না হলে চোখে জ্বালা দেওয়া, কড়কড় করার মতো নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।