ছন্নছাড়া বোলিংয়ে জিম্বাবুয়ের কাছে হারল বাংলাদেশ

নিজেদের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবার দুইশ ছাড়ানো পুঁজি পেল জিম্বাবুয়ে। যার সামনে দাঁড়াতে পারল না বাংলাদেশ। ছন্নছাড়া বোলিংয়ের পর ব্যাটিংয়ে আশা জাগালেও এত বড় চ্যালেঞ্জ টপকাতে পারল না লাল সবুজের দল। ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে হারাল জিম্বাবুয়ে।
সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ১৭ রানে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ক্রেইগ আরভীনের দল।
আজ শনিবার ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২০৫ রান সংগ্রহ করেছে জিম্বাবুয়ে। জবাব দিতে নেমে ১৮৮ রানে থেমে যায় বাংলাদেশ।
হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে রান তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফেলেন মুনিম শাহরিয়ার (৮)। সেই ধাক্কা কাটিয়ে অবশ্য স্বাগতিকদের ওপর ঝড় তোলেন লিটন দাস। কিন্তু অদ্ভুত রানআউটে ভাঙে তাঁর প্রতিরোধ।
সপ্তম ওভারে শন উইলিয়ামসের বলে সহজ ক্যাচ তুলে দেন লিটন। তবে বিস্ময়করভাবে ফিল্ডার রিচার্ড এনগারাভা মুঠো জমাতে পারলেন না। তিনি ছুড়ে দিলেন উইলিয়ামসের কাছে। তখন ধীরে ধীরে হাঁটছিলেন লিটন। কিন্তু উইলিয়ামস বল পেয়েই বেলস ফেলে দেন। ৩৩ বলে ভাঙে ৫৮ রানের জুটি। ১৯ বলে ছয় চারে লিটন করেন ৩২।
এরপর থিতু হয়ে একে একে ফিরেন এনামুল হক বিজয় (২৬), নাজমুল হোসেন শান্ত(৩৭) ও আফিফ হোসেন (১০)। শেষে সৈকতকে নিয়ে আশা জাগিয়ে তোলেন নুরুল হাসান সোহান। কিন্তু জিম্বাবুয়ের বোলারদের ওপর চড়াও হয়েও পারলেন না জয় এনে দিতে। ২৬ বলে ৪২ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
এর আগে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে তৃতীয় ওভারে প্রথম সাফল্য পায় বাংলাদেশ। দলের তৃতীয় ও নিজের প্রথম ওভার বোলিং করতে এসেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন মুস্তফিজুর রহমান। ওভারের চতুর্থ বলেই রেভিস চাকাভাকে ৮ রানে বিদায় করেন কাটার মাস্টার। পাওয়ার প্লেতে এই একটি উইকেটই নিতে পারে বাংলাদেশ।
সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে এসে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন সৈকত। ফেরান অধিনায়ক ক্রেইগ আরভীনকে। ৪৩ রানে দুই উইকেট হারানোর পর কিছুটা চাপেই পড়ে যায় স্বাগতিকরা।
তবে সেই ধাক্কা কাটিয়ে জিম্বাবুয়েকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান শন উইলিয়ামস ও ওয়েসলি মাধাভেরে। দুজনে মিলে উপহার দেন ৩৭ বলে ৫৬ রানের জুটি।
জমে যাওয়া এই জুটি অবশেষে ভাঙেন মুস্তাফিজ। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসেই ফেরান উইলিয়ামসকে। চার বাউন্ডারি এক ছক্কায় ১৯ বলে ৩৩ রান করে থামেন উইলিয়ামস।
উইলিয়ামস ফিরলে সিকান্দার রাজার সঙ্গে আরেকটি চমৎকার জুটি উপহার দেন মাধাভেরে। এই জুটিতেই শক্ত পুঁজি পেয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত ৬৭ রান করেন মাধাভেরে। ৪৬ বলে তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ৯ বাউন্ডারি দিয়ে। সিকান্দার রাজা করেন মাত্র ২৬ বলে ৬৫ রান। তাঁর ইনিংসে ছিল সাত বাউন্ডারি ও চার ছক্কা।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৫০ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট পেয়েছেন মুস্তাফিজ। ২১ রান দিয়ে সৈকত নিয়েছেন এক উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ২০৫/৩ (চাকাভা ৮, আরভিন ২১, মাধেভেরে ৬৭ (আহত অবসর), উইলিয়ামস ৩৩, রাজা ৬৫*, বার্ল ০*; তাসকিন ৪-০-৪২-০, নাসুম ৪-০-৩৮-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৫০-২, মোসাদ্দেক ৩-০-২১-১, শরিফুল ৪-০-৪৫-০, আফিফ ১-০-৬-০)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৮৮/৬ (মুনিম ৪, লিটন ৩২, এনামুল ২৬, শান্ত ৩৭, আফিফ ১০, সোহান ৪২*, মোসাদ্দেক ১৩, নাসুম ০*; এনগারাভা ৪-০-৪৩-১. মাসাকাদজা ৩-০-২৩-১, চিভাঙ্গা ৩-০-২৮-০, উইলিয়ামস ২-০-৭-০, রাজা ৩-০-৩০-১, জঙ্গুয়ে ৪-০-৩৪-২, মাধেভেরে ১-০-১২-০)।
ফল :১৭ রানে জয়ী জিম্বাবুয়ে।