শরীরে পানি জমার কারণ কী?

দেহের ওজন বাড়ে মেদের জন্য। এখন আবার তার সঙ্গে আবার যোগ হয়েছে পানিও। ক্যালোরি পুড়িয়ে না হয় মেদ গলিয়ে ফেললেন। কিন্তু মরণপণ চেষ্টা করেও শরীর থেকে পানির বাড়তি ওজন কমাতে পারছেন না। তাহলে কি পানি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেবেন? কিন্তু শরীরে পানির ঘাটতি হলে শারীরবৃত্তীয় কাজকর্মও থমকে যেতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে হলে সারাদিনে অন্ততপক্ষে ৭-৮ গ্লাস পানি খেতেই হয়।
কিন্তু দেহের ভিতর বাড়তি এই পানরি উৎস কী? চিকিৎসকরা বলছেন, শরীরে জমা পানির সঙ্গে পানি খাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস কিংবা শারীরিক সমস্যার কারণে শরীরের নানা প্রকোষ্ঠে, অস্থিসন্ধিতে পানি জমতে শুরু করে। টিস্যুও বেশ অনেকটা পরিমাণ পানি ধরে রাখতে পারে। মেদ তো রয়েছেই, সঙ্গে এই পানির কারণেও দেহের ওজন অনেকটা বেড়ে যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে ‘ওয়াটার রিটেনশন’ বলা হয়। কিছু ক্ষেত্রে মেদ ঝরানো সহজ হলেও পানির ওজন কিন্তু সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের
যে কারণে ‘ওয়াটার রিটেশন’ হয়
– খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকলে বা প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেলে ‘ওয়াটার রিটেনশন’ বা পানির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। এই কারণে ইলেক্ট্রোলাইটের সমতা বিঘ্নিত হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
– এই ধরনের সমস্যা নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। বিশেষত ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে বা পরে। কারণ, প্রতি মাসে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে এবং পরে প্রজননে সহায়ক হরমোনগুলোর মাত্রা ওঠানামা করে। যে কারণে শরীরে ফ্লুইডের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
– আবার এমন কিছু রোগ রয়েছে, যেগুলো শরীরে পানির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। লিভার, কিডনি বা হার্টের নির্দিষ্ট বেশ কিছু সমস্যায় শরীরে পানির পরিমাণ বাড়তে শুরু করে।
‘ওয়াটার ওয়েট’ নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে
– খাবারে লবণের পরিমাণ কমাতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ভাজাভুজি, প্যাকেটবন্দি বা কৌটোবন্দি খাবার, তৎক্ষণাৎ বানিয়ে ফেলা যায়, এমন খাবারও ডায়েট থেকে বাদ দিতে হবে।
– পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। পানি কম খেয়ে শরীরে জমা ‘পানি’-এর পরিমাণ কমানো যাবে না। উল্টে বেশি করে পানি খেলে শরীরে জমা ‘টক্সিন’ সহজে বেরিয়ে যাবে।
– শরীরচর্চা করতে হবে। নিয়মিত শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালন করলে ‘ওয়াটার রিটেনশন’-এর সম্ভাবনা কমে।
– ডায়েটে সোডিয়ামের বদলে পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার রাখা যেতে পারে। পটাশিয়াম কিন্তু শরীরে জমা ফ্লুইডের পরিমাণ হ্রাস করতে সাহায্য করে।
– কার্বোহাইড্রেট খেতে হবে মেপে। কারণ, অতিরিক্ত কার্ব কিন্তু দেহের পেশি এবং লিভারে গ্লাইকোজেন রূপে জমা হতে থাকে। এই উপাদানটির কিন্তু পানি ধরে রাখার ক্ষমতা আছে। ফলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।